সোনালি বিবির ফেরা থেকে বিজেপির ‘দ্বিনাগরিকত্ব’, সংহতি দিবসে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ তৃণমূলের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৩০: ৬ ডিসেম্বর ‘সংহতি দিবস’ এবং ডঃ বি আর আম্বেদকরের প্রয়াণ দিবসে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগল তৃণমূল। দলের তরফে এক সাংবাদিক সম্মেলনে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) এবং ডঃ শশী পাঁজা (Dr. Shashi Panja) বলেন শুক্রবার অন্যায়ভাবে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুনের আইনি পথে জয়ী হয়ে ঘরে ফিরেছেন। অন্যদিকে রাজ্যের শাসকদল বিজেপি নেতাদের ‘দ্বিনাগরিকত্ব’ নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছে।
এদিন অর্থ ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সোনালি বিবির (Sonali Bibi) প্রসঙ্গ তুলে ধরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, বীরভূমের পাইকড়ের বাসিন্দা সোনালি খাতুনকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে, জোর করে চোখ বেঁধে রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশে (Bangladesh) পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অথচ সোনালির কাছে সমস্ত বৈধ নথিপত্র, বাবার ২০০২ সালের ভোটার লিস্টের নাম এবং আধার কার্ড (Aadhar card) ছিল। হাস্যকরভাবে, ২০০০ সালে জন্ম নেওয়া সোনালিকে কেন্দ্রের মোদী সরকার অভিযুক্ত করেছিল ১৯৯৮ সালে অনুপ্রবেশ করার জন্য। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “ন্যায়কে পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না, তা সূর্যের আলোর মতোই উন্মোচিত হয়।” কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে এবং রাজ্য সরকার ও পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের সহায়তায় সোনালি খাতুন অবশেষে নিজের বাড়িতে ফিরে আসতে পেরেছেন।
অন্যদিকে, ডঃ শশী পাঁজা বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে ‘অনুপ্রবেশ’ ইস্যুতে দ্বিচারিতার অভিযোগ আনেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিজেপি নেতারা যখন কথায় কথায় অনুপ্রবেশ নিয়ে সরব হন, তখন তাদের দলের নেতাদেরই কেন দুই দেশে নাগরিকত্ব থাকে? তিনি স্বরূপনগরের বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য সুভাষচন্দ্র মন্ডলের (Subhash Chandra Mandal) উদাহরণ টেনে আনেন। তৃণমূলের (TMC) অভিযোগ, এই নেতার ভারতে যেমন ভোটার কার্ড রয়েছে, তেমনই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলাতেও ‘সুভাষ মন্ডল’ নামে ভোটার কার্ড রয়েছে। একই ব্যক্তি দুই দেশের নাগরিক হয়েও কীভাবে ভারতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং জেতেন, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জবাব চেয়েছে তৃণমূল।
এছাড়াও, রানাঘাটের (Ranaghat) বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের (Jagannath Sarkar) ‘ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত তুলে দেওয়া’র মন্তব্যেরও কড়া সমালোচনা করা হয়। শশী পাঁজা আরও অভিযোগ করেন, বিজেপিশাসিত ত্রিপুরায় (Tripura) অনুপ্রবেশ অবাধে চলছে। অক্টোবরে ত্রিপুরায় ২২ জন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন, যার মধ্যে ১১ জন মাত্র ২,০০০ টাকার বিনিময়ে বিএসএফ-এর (BSF) চোখ এড়িয়ে ঢুকেছেন। মেঘালয় বা ত্রিপুরায় এনআরসি (NRC) বা কড়া নজরদারি না হলেও বাংলাকে কেন বারবার টার্গেট করা হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তোলে তৃণমূল নেতৃত্ব।
সংহতি দিবসে সংবিধান ও ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার শপথ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা এবং অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই জারি থাকবে। সোনালির স্বামীর ফেরানো নিয়েও আইনি লড়াই চলছে বলে জানানো হয়েছে।