বাংলা বলা অপরাধ? ভিনরাজ্যে ‘নিগৃহীত’ বাঙালি শ্রমিকরা, অভিষেকের প্রশ্নের জবাব এড়াল কেন্দ্র

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২২:৩০: বাংলা ভাষায় কথা বলার ‘অপরাধে’ ভিনরাজ্যে, বিশেষত বিজেপি (BJP) শাসিত রাজ্যগুলিতে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা। এমনকি ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে জোর করে তাঁদের ওপার বাংলায় ‘পুশব্যাক’ করার মতো গুরুতর অভিযোগও সামনে এসেছে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এই ইস্যুতে সরব হয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) কেন্দ্রের কাছে জবাব চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant workers) নিরাপত্তা ও হেনস্থা সংক্রান্ত সেই সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন কৌশলগতভাবে এড়িয়ে গেল কেন্দ্রীয় সরকার।
সংসদ সূত্রে খবর, ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কেন বাংলাভাষী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দেওয়া হচ্ছে? কেন তাঁদের জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে? যদিও কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক এই স্পর্শকাতর বিষয়গুলিতে কোনও আলোকপাত করেনি। মন্ত্রকের তরফে লিখিত জবাবে কেবল জানানো হয়েছে, অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য জাতীয় ডাটাবেস তৈরি হয়েছে এবং ‘ই-শ্রম’ পোর্টাল চালু করা হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের ওপর হওয়া নির্যাতন বা ‘পুশব্যাক’ নিয়ে কেন্দ্র কেন নীরব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই সামনে এসেছে বীরভূমের সোনালি বিবির মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা, যা বিরোধীদের অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে। কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকা সোনালি বিবি ও তাঁর পরিবারকে ‘বাংলাদেশি’ অপবাদ দিয়ে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ ছয় মাস ওপার বাংলায়, যার মধ্যে তিন মাস জেলবন্দি দশায় কাটানোর পর সম্প্রতি সোনালি বিবি (Sonali Bibi) ও তাঁর নাবালক পুত্র আইনি লড়াই শেষে বীরভূমের বাড়িতে ফিরেছেন। যদিও তাঁর স্বামী-সহ আরও চারজন এখনও বাংলাদেশে আটকে রয়েছেন। দেশে ফিরে সোনালি দেবী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁর পরিবারের বাকি সদস্যরা কবে ফিরবেন বা আদৌ ফিরতে পারবেন কি না, সেই সদুত্তর কেন্দ্রের তরফে মেলেনি।
উল্লেখ্য, গত অধিবেশনেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের সঠিক পরিসংখ্যান এবং তাঁদের সুরক্ষায় নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে কেন্দ্রের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন। সেবারও মোদী সরকার (Modi government) কোনও স্পষ্ট তথ্য দিতে পারেনি। এবারও বাংলাভাষীদের হেনস্থা নিয়ে কেন্দ্রের এই ‘এড়িয়ে যাওয়া’র নীতিতে ক্ষুব্ধ তৃণমূল শিবির। সংসদের ভিতরে ও বাইরে এই ইস্যুতে প্রতিবাদ জারি রেখেছেন তৃণমূল সাংসদরা।