বহুতলে বুথ তৈরির সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠল কমিশন! মমতার আপত্তিতেই কি সিদ্ধান্ত বদল?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২২:৩৫: বহুতল আবাসনগুলিতে পৃথক ভোটকেন্দ্র (Polling station) তৈরির যে পরিকল্পনা নিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India), শেষ পর্যন্ত তা থেকে পিছিয়ে এল তারা। প্রাথমিক উৎসাহ থাকলেও, আবাসনগুলির তরফ থেকে আশানুরূপ সাড়া না মেলা এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তির পরেই কমিশন তাদের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করল বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে আগামী নির্বাচনে আবাসন চত্বরের ভিতরে আলাদা করে কোনও বুথ হচ্ছে না।
কমিশন সূত্রে খবর, আবাসনে বুথ তৈরির সম্ভাব্যতা যাচাই করতে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের (DEO) কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছিল। সোমবার পর্যন্ত সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময়সীমা ধার্য ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও, সারা রাজ্য থেকে মাত্র দু’টি রিপোর্ট কমিশনের দপ্তরে জমা পড়েছে। রাজনৈতিক দলগুলি এবং খোদ আবাসন কমিটিগুলির তরফেও এ বিষয়ে বিশেষ কোনও আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। মূলত এই ‘অনাগ্রহ’-এর কারণেই আবাসনে বুথ তৈরির পরিকল্পনা বাতিল করার পথে হাঁটল কমিশন।
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে (2026 Assembly Elections) পাখির চোখ করে শহরাঞ্চলে ভোটের হার বৃদ্ধিতে বিশেষ জোর দিতে চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। সেই লক্ষ্যেই স্থির হয়েছিল, শহরের যে সমস্ত বহুতল আবাসনে ৩০০ জনের বেশি ভোটার রয়েছেন, তাঁদের সুবিধার্থে আবাসনের ভিতরেই ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হবে। এতে ভোটারদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হবে না এবং বহিরাগতদের প্রবেশ আটকাতে সুবিধা হবে, এমনটাই ছিল কমিশনের যুক্তি। এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছিল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপিও (BJP)।
তবে কমিশনের এই পরিকল্পনার শুরু থেকেই তীব্র বিরোধিতা করে আসছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। এসআইআর (SIR) চলাকালীন গত মাসে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে (Gyanesh Kumar) পরপর দু’টি চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। চিঠিতে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘বুথ সব সময়েই সরকারি বা আধা-সরকারি জায়গায় হয়ে থাকে। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন আবাসনে বুথ তৈরি হয় কী ভাবে?’’ তাঁর মতে, এটি যথেষ্ট সমস্যাজনক এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি করতে পারে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল (Manoj Kumar Agarwal) জানিয়েছিলেন, সিদ্ধান্তটি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নেওয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত থেকেই সরে এল কমিশন।