IndiGo crisis: সঙ্কটে উত্তরবঙ্গের পর্যটন, ৫০ কোটির ক্ষতির আশঙ্কায় মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২৩:৩২: শীতের মরশুমের শুরুতেই বড় ধাক্কা খেল উত্তরবঙ্গ (North Bengal) ও সিকিমের পর্যটন শিল্প (Sikkim’s tourism industry)। নেপথ্যে ইন্ডিগো বিমানের নজিরবিহীন বিভ্রাট (IndiGo crisis)। গত কয়েকদিন ধরে একের পর এক উড়ান বাতিল ও দীর্ঘ বিলম্বের জেরে মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম পাহাড়ের অর্থনীতির। হোটেল থেকে হোমস্টে- সর্বত্রই এখন ভিন রাজ্যের পর্যটকদের (Tourist) বুকিং বাতিলের হিড়িক। পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে আসন্ন বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষে পাহাড় পর্যটকশূন্য থাকার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
বাগডোগরা বিমানবন্দর (Bagdogra Airport) সূত্রে খবর, এখান থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রোজদিন ইন্ডিগোর ১২টি বিমান ওঠানামা করে। এর মধ্যে কলকাতা ও দিল্লির রুটে ৩টি করে এবং হায়দ্রাবাদ, বেঙ্গালুরু, মুম্বই, চেন্নাই ও দুর্গাপুর রুটে ১টি করে বিমান চলাচল করে। কিন্তু গত মঙ্গলবার থেকে এখনও পর্যন্ত সারা দেশে এই সংস্থার ছয়শোর বেশি উড়ান বাতিল হয়েছে। বহু বিমান চলছে দেরিতে। গত ছয় দিন ধরে চলা এই অচলাবস্থার সরাসরি প্রভাব পড়েছে উত্তরবঙ্গের পর্যটনে।
ট্যুর অপারেটর সংস্থাগুলো জানিয়েছে, দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু এবং গুয়াহাটির প্রায় ৮০ শতাংশ পর্যটক ইন্ডিগোর বিমানেই দার্জিলিং ও সিকিমে বেড়াতে আসেন। বিমান বিভ্রাটের জেরে দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিমে ইতিমধ্যেই ভিন রাজ্যের পর্যটকদের প্রায় ১৫ শতাংশ বুকিং বাতিল হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক হিসাবে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, এই অচলাবস্থা অব্যাহত থাকলে লোকসান দ্বিগুণ ছাড়িয়ে যেতে পারে। বছর শেষের মুখে এই বিপর্যয় হোটেল মালিক ও ট্যুর অপারেটরদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের (Himalayan Hospitality and Tourism Development Network) সভাপতি সম্রাট স্যান্যাল বলেন, “আমার নিজের সংস্থার মাধ্যমেই দক্ষিণ ভারত থেকে ১৫টি পর্যটকের দলের সিকিমে আসার কথা ছিল। কিন্তু ইন্ডিগোর পরিস্থিতি দেখে শনিবার তাঁরা হোটেল ও হোমস্টে বুকিং বাতিল করেছেন। দিল্লি, মুম্বই, গুজরাট, কেরালা এবং বিহার থেকেও পর্যটকরা মুখ ফেরাচ্ছেন।” তিনি আরও জানান, সিকিমে ১,১৮১টি হোটেল, ১,৯৮১টি হোমস্টে এবং ৬০০-র বেশি রেস্তোরাঁ মূলত শীতকালীন পর্যটকদের ভরোসাতেই থাকে। পাহাড়ে তুষারপাত শুরু হওয়ায় এবার বুকিংয়ের হার ভালোই ছিল, কিন্তু উড়ান বিভ্রাটে তা এখন তলানিতে।
একই ছবি দার্জিলিং ও কালিম্পংয়েও। দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের (Darjeeling Hotel Association) সভাপতি বিজয় খান্না জানান, দার্জিলিং পাহাড়ে ৩৫০টি এবং কালিম্পংয়ে ২০০টি হোটেল রয়েছে। প্রতিটি হোটেলেই বুকিং বাতিলের ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, “ভিন রাজ্যের পর্যটকরা চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বের আশঙ্কায় যে হারে বুকিং বাতিল হচ্ছে, তাতে পর্যটন শিল্পে বড়সড় ধস নামতে পারে।”