রাজ্যে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ছে ৫৮ লক্ষ নাম! কাদের ডাকা হবে শুনানিতে? রইল বিস্তারিত

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২১:১৫: রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের এনুমারেশন (Enumeration) বা তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (Election Commission) সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের খসড়া ভোটার তালিকা (Voter List of West Bengal) থেকে বিপুল সংখ্যক নাম বাদ পড়তে চলেছে। সব মিলিয়ে এই সংখ্যাটি ৫৮ লক্ষ ৮ হাজার ২০২। মৃত, স্থানান্তরিত, নিখোঁজ এবং ভুয়ো ভোটারদের চিহ্নিত করার পরেই এই চূড়ান্ত পরিসংখ্যান উঠে এসেছে।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, নাম বাদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মৃত ভোটাররা (Dead voters)। রাজ্যে এমন ভোটারের সংখ্যা প্রায় ২৪ লক্ষ ১৮ হাজার ৬৯৯। এরপরেই রয়েছে স্থানান্তরিত ভোটার, যাঁদের সংখ্যা ১৯ লক্ষ ৯৩ হাজার ৮৭। এরা মূলত ঠিকানা পরিবর্তন করেছেন বা একাধিক জায়গায় তাঁদের নাম ছিল, যা এখন একটি জায়গায় রেখে বাকিগুলি বাদ দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও, প্রায় ১২ লক্ষ ১ হাজার ৪৬২ জন ভোটারের কোনও খোঁজ মেলেনি। নিয়ম অনুযায়ী, বুথ স্তরের আধিকারিকরা (BLO) তিনবার বা তার বেশি বাড়িতে গিয়েও খোঁজ না পেলে তাঁদের ‘নিখোঁজ’ তালিকাভুক্ত করা হয়। পাশাপাশি, ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৭৫ জন ‘ভুয়ো’ ভোটার এবং ‘অন্যান্য’ ক্যাটাগরিতে থাকা ৫৭ হাজার ৫০৯ জনের নামও তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।
কমিশন ভোটারদের তিনটি বিশেষ ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে
১. নিজস্ব ম্যাপিং (Own Mapping): ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম ছিল (সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৯৩ লক্ষ)।
২. প্রজিনি ম্যাপিং (Progeny Mapping): ২০০২ সালের তালিকায় নিজের নাম না থাকলেও বাবা-মা বা আত্মীয়ের নাম ছিল (সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ)।
৩. নন-ম্যাপিং (Non-Mapping): যাঁদের নিজেদের বা আত্মীয়ের নাম ২০০২ সালের তথ্যে নেই।
কমিশন স্পষ্ট করেছে, এই ‘নন-ম্যাপিং’ তালিকায় থাকা প্রায় ৩০ লক্ষ ভোটারকে বাধ্যতামূলকভাবে শুনানিতে ডাকা হবে। তাঁদের নথি এবং তথ্যপ্রমাণ যাচাই করা হবে। বাকি দুই বিভাগের ক্ষেত্রে কেবল তথ্যে সন্দেহ থাকলে তবেই তলব করা হবে।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর রাজ্যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। তালিকায় কোনও ভুল থাকলে বা আপত্তি থাকলে তা কমিশনকে জানানো যাবে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুনানি পর্ব চলবে। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর থেকে দেশের ১২টি রাজ্যে এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশ-সহ সাতটি রাজ্যে সময়সীমা বাড়ানো হলেও, পশ্চিমবঙ্গে পূর্বঘোষিত সূচি মেনেই বৃহস্পতিবার এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।