SIR আবহে আগামী সপ্তাহে মতুয়া আবেগে শান দিতে রানাঘাটে আসছেন মোদী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৪৫: ছাব্বিশের আগে মতুয়া আবেগে শান দিতে রানাঘাটে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী ২০ ডিসেম্বর রানাঘাটে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা। বাংলা-সহ ১২ রাজ্যে চলছে ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধন বা এসআইআরের কাজ। বাংলায় সেই কাজ শেষের পথে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই খসড়া তালিকায় কত সংখ্যক নাম বাদ পড়তে পারে, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। আতঙ্ক বেশি উদ্বাস্তু ও মতুয়া গড়ে। সম্প্রতি বাঙালি বিজেপি সাংসদদের এই নিয়ে সতর্ক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এসআইআর নিয়ে সমঝে কথা বলার বার্তা দিয়েছিলেন।
মানুষের মনে, বিশেষ করে মতুয়া মনে যাতে কোনও ভয় না তৈরি হয়, সেই দিকটি সুনিশ্চিত করার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। এবার এই আবহে ‘এক ঢিলে দুই পাখি’কে টার্গেট করে বঙ্গে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রানাঘাটের তাহেরপুরে জনসভা করবেন তিনি। তাহেরপুর উদ্বাস্তু গড় বলে পরিচিত। ফলে একযোগে মতুয়া ও উদ্বাস্তু ভোটকে নজরে রেখে মোদির এই কর্মসূচি বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের।
এর আগে এবছরই মে থেকে অগস্ট মাসের মধ্যে এরাজ্যে তিন তিনটি সভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম সভাটি হয়েছিল উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারে। দ্বিতীয়টি দুর্গাপুরে। তৃতীয়টি হয় কলকাতার কাছাকছি দমদমে। তখনই শোনা গিয়েছিল ডিসেম্বর মাসের কোনও এক সময়ে কৃষ্ণনগর বা রানাঘাটের কোনও এক জায়গায় প্রধানমন্ত্রী জনসভা করবেন। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন বা ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন, রাজ্যের মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় বেশ ভাল ফল করেছিল বিজেপি। তবে চলতি SIR আবহে নাগরিকত্ব ইস্যুতে মতুয়াদের একটা বড় অংশের মধ্যে দ্বিধা ও দ্বন্দ্ব কাজ করছে। ইতিমধ্যেই মতুয়াদের মধ্যে একটা অংশ যারা মূলতঃ মমতাবালা ঠাকুরের অনুগামী বা তৃণমূল পন্থী, তারা এই SIR পর্বকেই মতুয়া বিরোধী বলে দাবি করছেন।
২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে যা বিজেপির কাছে অশনিসংকেত হতে পারে, বিশেষ করে যে মতুয়া সম্প্রদায় শেষ দুই নির্বাচনে অনেকটাই তাদের পাশে থেকেছে, সেই ভোট সরে গেলে বিজেপির বাংলা দখলের স্বপ্ন অনেকটাই ব্যাঘাত প্রাপ্ত হবে বলে মত পর্যবেক্ষকদের অনেকের।
বৃহস্পতিবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষ্ণনগরে সভা করেছেন। সেখানে মানুষকে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলায় এনআরসি হবে না, ডিটেনশন ক্যাম্প হবে না। মনে রাখবেন, আমি ভোট চাইতে আসিনি। নিশ্চিন্তে থাকুন, কাউকে তাড়াতে দেব না। সবাইকে স-সম্মানেই রক্ষা করব।” কৃষ্ণনগরের মাটিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য যে কাদেরকে উদ্দেশ্য করে সেটা সহজেই অনুমেয়। উল্লেখ্য, ব্রিগেডের গীতাপাঠের ধাঁচে (বিজেপির অনুষ্ঠান বলে দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী) এবার সেখানে লক্ষ কণ্ঠের হরিনাম সংকীর্তনের আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজক, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের গোসা পরিষদ। যার নেত্রী তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর।