এখনই লোকাল ট্রেন নয়, জানাল রেলকর্তৃপক্ষ
দু’শো দিন পেরিয়ে গিয়েছে। হাল্কা জংয়ের দাগ দেখা যাচ্ছে রেললাইনে। দুর্গাপুজোর ঠিক এক সপ্তাহ বাকি। আর কবে চলবে লোকাল ট্রেন? এই প্রশ্ন গোটা বাংলার। চাপ বাড়ছে। রেল কর্তার অবশ্য সাফ জবাব, এখনই নয়। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব এবার কাটবে লোকালবিহীন, ইঙ্গিত স্পষ্ট।
এই প্রসঙ্গে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদব বলেন, ‘রাজ্যে কবে থেকে লোকাল ট্রেন চালানো সম্ভব, তা এখনই বলা যাবে না। কারণ লোকাল চালানোর আগে অনেক কিছু মাথায় রাখতে হবে— যাতে অযথা ভিড় না হয়, মানুষ আরও বেশি অসুস্থ হয়ে না পড়েন। আমরা করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। এক্ষেত্রে কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি। লোকাল ট্রেন চালু করার আগে রেল-রাজ্য যৌথ নির্দেশিকা তৈরি করতে হবে।’ এহেন মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই মনে করা হচ্ছে, পরিষেবা চালু হওয়ার পথে প্রধান অন্তরায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ। ফলে পুজোর সময় রাজ্যে লোকাল ট্রেনের চাকা গড়ানোর সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় দেশজোড়া লকডাউন শুরু হয়েছিল মার্চের শেষ সপ্তাহে। তখন থেকেই বন্ধ রয়েছে কলকাতা শহর ও শহরতলিতে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। প্রায় সাত মাস। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় লোকাল চালুর দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন মানুষ। কিন্তু কাজ হয়নি। এদিন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভিড় নিয়ন্ত্রণের উপায় বের করা না গেলে কলকাতা শহর ও শহরতলিতে লোকাল চালুর সবুজ সঙ্কেত দেবে না কেন্দ্র। গত ১৩ অক্টোবর এই ইস্যুতে আলোচনা চেয়ে রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়েছেন পূর্ব রেলের অ্যাডিশনাল জেনারেল ম্যানেজার অনিত দুলাত। মন্ত্রক সূত্রের খবর, কোনও হঠকারী সিদ্ধান্ত নয়। বরং লোকাল ট্রেন নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে সবিস্তার আলোচনাতেই জোর দিতে চাইছে রেল বোর্ড। চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘কলকাতা মেট্রো পরিষেবা দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনার পরেই চালু হয়েছে। লোকালের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না।’
তবে শুধু রাজ্যের লোকাল নয়, দেশজুড়ে ট্রেন পরিষেবা পুনরায় স্বাভাবিক হওয়ার বিষয়টি নিয়েও চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। মন্ত্রকের ওই শীর্ষ কর্তা এদিন আরও বলেছেন, ‘উৎসবের সময়ে আমাদের আরও বেশি সচেতন থাকতে হবে। করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি যাতে লঙ্ঘিত না হয়, তা সুনিশ্চিত করা জরুরি। এই পরিস্থিতিতে কবে থেকে রেগুলার ট্রেন চালু হবে কিংবা নতুন টাইম টেবিল প্রকাশ পাবে, তা এখনই বলা যাবে না।’ যদিও রেল বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিটি যাত্রীবাহী স্পেশাল ট্রেনের আসন চাহিদা দৈনিক ভিত্তিতে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চাহিদা বাড়লেই সংশ্লিষ্ট রুটে অতিরিক্ত পরিষেবা ঘোষণা করছে মন্ত্রক।