পুজোর আগেই ভাতা পাচ্ছেন প্রায় ২ লক্ষ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা
পুজোর আগেই ভাতার টাকা পাচ্ছেন মুর্শিদাবাদ জেলার প্রায় দু’লক্ষ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। এছাড়া প্রতিবন্ধী এবং বিধবাদের অ্যাকাউন্টেও টাকা পাঠানো হচ্ছে। উৎসবের মরশুমে তাঁরা নভেম্বর মাসেরও ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন। একসঙ্গে দু’মাসের টাকা পাওয়ায় খুশি তাঁরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো শুরু হয়ে গিয়েছে। পুজোর আগে এই টাকা তাঁদের বিশেষ কাজে লাগবে। জেলায় মোট এক লক্ষ ৮৯ হাজার ১৪৯জনের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হচ্ছে। মুর্শিদাবাদ জেলার ডিপিআরডিও সচিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ভাতা অ্যাকাউন্টে চলে যায়। কোনও সমস্যা হয় না।
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, আমাদের রাজ্য সরকার অত্যন্ত মানবিক। এই সিদ্ধান্তেই তা বোঝা যায়। প্রতি মাসে টাকা শুধু নির্দিষ্ট সময় দিচ্ছে না, উৎসবের মরশুমে অগ্রিম ভাতাও দিচ্ছে। আগের সরকারের আমলে এসব ভাবা যেত না। লকডাউনের সময়ে এই ভাতার টাকাই অনেকের সংসার চালাতে সাহায্য করেছিল। গ্রামীণ এলাকায় দু’হাজার টাকা অনেক পরিবারের কাছে অত্যন্ত দরকারি। রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে একাধিক প্রকল্প এনেছে। সবগুলিতেই তাঁরা উপকৃত হচ্ছেন।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জেলায় ৬০ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে ৭৫ হাজার ৭৩৩ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন। ৮০ বছরের উপরে ৪৩হাজার ৭৫৭ জনের অ্যাকাউন্টে টাকা যাচ্ছে। ৫৭ হাজার ৯৩৪ জন বিধবা ভাতা পাচ্ছেন। ১১হাজার ৭২৫জন প্রতিবন্ধীও এই সুবিধা পেতে চলেছেন।
বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের দপ্তরে এসেছিলেন শারীরিকভাবে অক্ষম অনুপ মন্ডল নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় আরও দু’জন এরকম শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছেন। হুইল চেয়ার নিয়ে ঘুরতে হয়। আমাদের সকলেরই আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সরকারের দেওয়া এই ভাতা যথেষ্টই কাজে লাগবে। আগে টাকা ঠিকমতো পাওয়া যেত না। অনেক সময় তিন-চার মাস পরে ভাতা পাওয়া যেত। তাতে খুব সমস্যা হতো। আমরা কোনও কাজ করতে পারি না। এই টাকাই সম্বল। কয়েক বছর ধরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অ্যাকাউন্টে টাকা আসে। পুজোর সময় সকলেরই কিছু খরচ থাকে। তাই একসঙ্গে দু’হাজার টাকা পাওয়াতে অনেক সুবিধা হবে। নভেম্বর মাসের টাকা অগ্রিম দেওয়া হবে বলে আমাদের জানা ছিল না।
তাঁর সঙ্গী এক ব্যক্তি বলেন, সরকার দ্রুত প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট দিতে চাইলেও এখনও সেই কাজ বিলম্বিত হয়। কিছু আধিকারিকের জন্যই এই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। অনেকেই বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘুরেও সার্টিফিকেট পাচ্ছেন না। কেউ কেউ অবশ্য নিয়ম না জানার জন্য সার্টিফিকেট হতে পান না। সার্টিফিকেট হাতে পাওয়া গেলে সরকারি অনেক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।