‘মতুয়াদের পিঠে ছুরি মারছেন প্রধানমন্ত্রী’, সংসদে SIR ইস্যুতে সরব মমতা ঠাকুর

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:৪৭: ভোটার তালিকা পুনর্নবীকরণের (SIR) নামে ওপার বাংলা থেকে আগত উদ্বাস্তু বাঙালি ও মতুয়াদের (Matua) নাম বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। সোমবার রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর। একইসঙ্গে এই ইস্যুতে তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে মতুয়া সমাজকে ঘরছাড়া করার চক্রান্তে লিপ্ত।
এদিন সংসদের উচ্চকক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা ঠাকুর (Mamata Thakur) বলেন, “আমার দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটার তালিকা পুনর্নবীকরণের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পূর্ব পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত কোটি কোটি ছিন্নমূল উদ্বাস্তু বাঙালি। ওপার বাংলা থেকে আসা লক্ষ লক্ষ মতুয়া হিন্দু আজ ভারতে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।”
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল সাংসদ জানান, কমিশন সংবিধানের ৩২৬ নং ধারা অনুসারে ১৯৫২ সাল এবং পরবর্তীতে ২০০২ সালের সময়সীমার কথা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, “কমিশন বলছে ২০০২ সালে যাদের ভোটার তালিকায় নাম আছে, পুনর্নবীকরণে তাদের নাম উঠে যাবে। মানুষ বিভ্রান্ত, কোনটা ঠিক? ২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মতুয়ারা ভোট দিয়ে সরকার গঠন করেছেন। আজ যদি বলা হয় তাঁদের ভোট বৈধ নয়, তবে গত ২২ বছর ধরে চলা সরকারও বৈধ নয়।”
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মমতা ঠাকুর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মতুয়াদের পিঠে ছুরি মারছেন, তাই ওনার পদত্যাগ করা উচিত।” তিনি আরও বলেন, ১৯৫২ সালে পাসপোর্টে বৈদেশিক আইন লাগু হলেও তা ঠিকভাবে প্রচার করা হয়নি। ফলে গত ৭০-৭৫ বছর ধরে অসংখ্য মানুষ মানবিক কারণে এদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। দেশভাগের জন্য এই মানুষগুলোর কোনও দোষ ছিল না, তবুও কেন অখণ্ড ভারতের এই ভূমিসন্তানরা আজ বলির পাঁঠা হবে?
এদিন কেন্দ্রীয় এক প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ আনেন এই মতুয়া প্রতিনিধি। তিনি বলেন, “ভারত সরকার এই অসহায় বাঙালিদের রক্ষা করার বদলে আরও বিপদে ফেলছে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী টাকার বিনিময়ে জাল বাংলাদেশি সার্টিফিকেট বানিয়ে দিচ্ছেন এবং মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভুল পথে চালিত করছেন।”



ভোটার তালিকায় নাম রাখার জন্য ১১টি নথি চাওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি জানান, সাধারণ মতুয়া বা হিন্দুদের কাছে সেই নথি নেই। তাঁর হুঁশিয়ারি, মানুষের এই বিপদকে পুঁজি করে যারা রাজনীতি করছে, আগামীদিনে ভোটের বাক্সে ১২ কোটি মানুষ তাদের যোগ্য জবাব দেবে।