‘পাক সীমান্তে তো তৃণমূল নেই’, অনুপ্রবেশ ইস্যুতে বিজেপিকে কড়া জবাব ঘাসফুলের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:০০: বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের দায় কার? এই প্রশ্নেই ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল জাতীয় রাজনীতি। সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর জন্য রাজ্য জমি দিচ্ছে না-বিজেপির এই অভিযোগের কড়া জবাব দিল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। সংসদে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সাফ প্রশ্ন, “ভারত-পাক সীমান্তে তো আর তৃণমূলের সরকার নেই, তাহলে সেখানে কেন এখনও সীমান্ত অরক্ষিত?” নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই বিজেপি রাজ্যের দিকে কাদা ছুড়ছে বলে অভিযোগ ঘাসফুল শিবিরের।
মঙ্গলবার সংসদ চত্বরে বিজেপি (BJP) সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো (Jyotirmoy Singh Mahato) অভিযোগ করেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের সুরক্ষায় রাজ্য সরকার অসহযোগিতা করছে। তাঁর দাবি, কাঁটাতার বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় জমি রাজ্য দিচ্ছে না বলেই সীমান্তের একটি বড় অংশ উন্মুক্ত রয়ে গিয়েছে এবং সেই সুযোগেই দেদার অনুপ্রবেশ ঘটছে।
বিজেপির (BJP) এই অভিযোগের মাঝেই সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পেশ করা একটি তথ্য হাতিয়ার করে পালটা আক্রমণ শানায় তৃণমূল (TMC)। দুই তৃণমূল সাংসদ ডা. শর্মিলা সরকার (Sharmila Sarkar) ও জগদীশ চন্দ্র বর্মা বাসুনিয়ার (Jagadish Chandra Barma Basunia) প্রশ্নের উত্তরে এদিন অমিত শাহের (Amit Shah) মন্ত্রক জানায়, ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তের প্রায় ১৫৫ কিলোমিটার এলাকা এখনও কাঁটাতারহীন (ফেন্সিং নেই)। এই তথ্য সামনে আসতেই বর্ধমান পূর্বের সাংসদ ডা. শর্মিলা সরকার প্রশ্ন তোলেন, “প্রথম কথা, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে তো তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার নেই। তাহলে সেখানে কেন গোটা এলাকায় কাঁটাতার দেওয়া গেল না?”
পাশাপাশি বাংলার ভৌগোলিক অবস্থানের কথাও তুলে ধরেন তিনি। সাংসদ বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের যে সীমান্ত রয়েছে, তার মধ্যে একটা বড় অংশ নদীনালা ও জলাভূমি। সেখানে কীভাবে ফেন্সিং করা সম্ভব?” তৃণমূলের দাবি, সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব BSF-এর। কিন্তু নিজেদের সেই ব্যর্থতা আড়াল করতেই এখন ‘ফেন্সিং’ ইস্যুকে ঢাল করে রাজ্যের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র। তৃণমূল নেতৃত্বের যুক্তি, ভারত-পাক সীমান্তে ৯৮ শতাংশ ফেন্সিং থাকার পরেও সেখান থেকে অনুপ্রবেশ ও নাশকতার খবর আসে। তাই শুধুমাত্র কাঁটাতার না থাকার দোহাই দিয়ে বিজেপি নিজেদের দায় এড়াতে পারে না।
এদিনের সংসদীয় অধিবেশনে উঠে আসে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। কলকাতা দক্ষিণের সাংসদ মালা রায়ের (Mala Roy) এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রক জানায়, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর (Operation Sindoor) পরবর্তী সময়েও পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ১০০০ কোটি টাকারও বেশি বাণিজ্য হয়েছে। অন্যদিকে, বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠানের (Yusuf Pathan) প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, গত তিন বছরে মানসিক চাপ ও অন্যান্য কারণে আধা-সামরিক বাহিনীর ৪৩৮ জন জওয়ান আত্মহত্যা করেছেন।