বাংলাদেশে হিংসার শিকড় পাকিস্তানেই! ভারত-বিদ্বেষের কলকাঠি নাড়ছে ISI?

December 19, 2025 | 2 min read
Published by: Ritam

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:৩০: বাংলাদেশের মাটিতে চলতে থাকা ধারাবাহিক ভারত-বিরোধী হিংসাত্মক কার্যকলাপের শিকড় আসলে অনেক গভীরে। আপাতদৃষ্টিতে একে স্থানীয় ক্ষোভ বা রাজনৈতিক অস্থিরতা মনে হলেও, এর নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ‘ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স’ বা আইএসআই-এর (ISI) গভীর চক্রান্ত। এমনই চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত বীণা সিক্রির। তাঁর মতে, বাংলাদেশকে (Bangladesh) ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য কট্টরপন্থী ইসলামি সংগঠন জামাত-ই-ইসলামিকে ‘কলের পুতুল’ হিসেবে ব্যবহার করছে পাকিস্তান (Pakistan)।

বীণা সিক্রির (Veena Sikri) বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বাংলাদেশে জামাত-ই-ইসলামি (Jamaat-e-Islami) রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় থাকলেও তাদের মূল চালিকাশক্তি হলো পাকিস্তান। পাকিস্তান (Pakistan) যা চাইছে, জামাত ঠিক সেটাই বাস্তবায়ন করছে। উদ্দেশ্য অত্যন্ত স্পষ্ট- ফের বাংলাদেশের ওপর পাকিস্তানের পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতকে চাপে রাখা। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জেনারেল এবং আইএসআই (ISI) অফিসাররা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর (Bangladesh Army) ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে, যার মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের নেতৃত্বের রাশ নিজেদের হাতে নেওয়া। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই প্রবণতা অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

পাকিস্তানের সেনাকর্তারা ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছেন যে, জয়েশ-ই-মহম্মদ ও লস্কর-ই-তোইবার মতো কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠনগুলি বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পাকিস্তান ও তাদের বাংলাদেশি দোসরদের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য হলো উত্তর-পূর্ব ভারতকে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। ভারতের সার্বভৌমত্বের পক্ষে যা বড়সড় বিপদ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন উত্তর-পূর্ব ভারতের গা ঢাকা দিয়ে থাকা জঙ্গি সংগঠনগুলিকে খোলাখুলি আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। এমনকি উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়াও ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো আইএসআই-এর নতুন কৌশল। এবারের অস্থিরতা সৃষ্টির ছক ২০২৪ সালের জুলাই মাসের আন্দোলনের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ঙ্কর ও সূক্ষ্ম। আইএসআই এবার সরাসরি নেতৃত্বে না এসে ‘ছদ্মবেশে’ আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ছে। জামাত, তাদের ছাত্র সংগঠন এবং মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত গোষ্ঠীগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা গণ্ডগোলের পুরোভাগে না থাকে। বরং তারা পিছন থেকে সাধারণ মানুষকে উস্কানি ও রসদ জোগাবে। এতে আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে এই দাঙ্গা বা হাঙ্গামা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভ, কিন্তু আসলে এর নিয়ন্ত্রণ থাকছে পাকিস্তানের হাতে।

হিংসার এই নীল নকশার বাস্তবায়নে পাকিস্তান থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং ডিজিটাল সহায়তা আসছে। বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলকে পাকিস্তান থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে। এই হ্যান্ডলগুলি থেকে ক্রমাগত ভারত-বিদ্বেষী প্রচার চালানো হচ্ছে এবং বোঝানো হচ্ছে যে ভারত কেবল শেখ হাসিনার রক্ষাকর্তা। সাধারণ নির্বাচনকে বানচাল করা এবং ভারতকে পূর্ব সীমান্তে চাপে রাখাই হলো আইএসআই-এর এই ‘ছদ্মবেশী’ যুদ্ধের মূল লক্ষ্য।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen