মুখে ‘জয় নিতাই’, নাগরিকত্ব প্রশ্নে ‘মৌন’ মোদী! তাহেরপুরের সভায় হতাশ SIR-এ নাম হারানো মতুয়ারা?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:০০: তাহেরপুরে (Taherpur) নির্বাচনী সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। কিন্তু মতুয়া নাগরিকত্বের সমাধানের কোনও দিশাই দিলেন না। শুধু তাঁর মুখে শোনা গেল শুধুই ‘জয় নিতাই’ ধ্বনি। খসড়া ভোটার তালিকা (SIR Voter List) প্রকাশ পেতেই হাজার হাজার নাম বাদ পড়াকে কেন্দ্র করে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে নদীয়ার মতুয়া (Matua) অধ্যুষিত এলাকায়। নাগরিকত্ব (Citizenship) হারানোর আশঙ্কায় যখন মোদীর থেকে প্রবল প্রত্যাশায় দিন গুনছেন হাজার হাজার মতুয়া ভক্ত ঠিক সেই সময় একেবারে ‘মৌন’ থাকলেন প্রধানমন্ত্রী।
সম্প্রতি প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় নদীয়া (Nadia) ও সংলগ্ন এলাকায় বহু মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের নাম বাদ পড়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এনআরসি (NRC) আতঙ্ক নতুন করে দানা বেঁধেছে। শনিবার তাহেরপুরের সভায় ভিড় জমিয়েছিলেন বহু মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের আশা ছিল, খসড়া ভোটার তালিকা নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা কাটাতে প্রধানমন্ত্রী হয়তো বড় কোনও ঘোষণা করবেন। কারণ, পরিসংখ্যান বলছে এসআইআর প্রক্রিয়ার পর সবথেকে বেশি নাম বাদ গিয়েছে মতুয়া প্রভাবিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলি থেকেই। শুধুমাত্র রানাঘাট উত্তর-পূর্ব ও রানাঘাট দক্ষিণ-এই দুই কেন্দ্র মিলিয়েই প্রায় ৪২ হাজার মতুয়ার নাম বাদ পড়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ফের উদ্বাস্তু হওয়ার আতঙ্ক গ্রাস করেছে তাঁদের।
স্বাভাবিকভাবেই এই পরিস্থিতিতে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখা বঙ্গ বিজেপির (BJP) কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এদিন প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে নাম বাদ পড়া বা সেই সমস্যার সমাধান নিয়ে সরাসরি কোনও পথ দেখাননি। বরং তিনি SIR-এর পক্ষে যুক্তি সাজিয়ে বলেন, “অনুপ্রবেশকারীদের রুখতেই এই প্রক্রিয়া। তৃণমূল যে এর বিরোধিতা করছে, তা কেবল অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে।” মতুয়াদের আবেগ ছুঁতে ভাষণে একাধিকবার ‘জয় নিতাই’ বললেও, কাজের কথায় মোদীর এই নীরবতায় হতাশ সভায় উপস্থিত সাধারণ মানুষ। তাঁদের অনেকেরই আক্ষেপ, “চিন্তা তো দূর হলো না, বরং রয়েই গেল।”
প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণকে ‘দিশাহীন’ ও ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে তোপ দেগেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। মোদীর সভার পরই তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “হঠকারি কমিশনের জন্য এসআইআর নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তার কোনও সুরাহা দিতে পারলেন না। যারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ছেন, তাঁদের জন্য কোনও বার্তা নেই তাঁর কাছে। মূল সমস্যা তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন।” ভোটের মুখে খসড়া তালিকা বিভ্রাট ও প্রধানমন্ত্রীর ‘মৌনতা’ বঙ্গ বিজেপির ওপর চাপ আরও বাড়াল কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।