মোদী-শাহদেরও আসল জন্ম শংসাপত্র নেই, সব নকল – SIR ইস্যুতে বিস্ফোরক মমতা
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:১১: রাজ্যে SIR প্রক্রিয়া নিয়ে এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে BLA (Booth Level Agent)-দের সঙ্গে বৈঠকে তিনি দাবি করেন, মোদী-শাহদের কাছেও তাঁদের মা-বাবার আসল জন্ম শংসাপত্র নেই। তাঁরা যা দেখাচ্ছেন, তা সবটাই ‘ডুপ্লিকেট’ বা নকল।
এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনের চাওয়া নথি, বিশেষ করে মা-বাবার জন্ম শংসাপত্র জমা দেওয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের হয়রানির অভিযোগে এদিন সরব হন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর যুক্তি, ২৫-৩০ বছর বা তার আগে অধিকাংশ মানুষেরই জন্ম হতো বাড়িতে, হাসপাতালে নয়। ফলে তাঁদের বা তাঁদের মা-বাবার কাছে জন্মের শংসাপত্র থাকা কার্যত অসম্ভব। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ পারবেন মা-বাবার সার্টিফিকেট দেখাতে? ওদেরটাও ফেক, ডুপ্লিকেট সার্টিফিকেট বানিয়েছে!’’
তৃণমূলনেত্রী আরও বলেন, ‘‘একটা ডুপ্লিকেট বা ফেক শংসাপত্র বানাতে এক সেকেন্ড সময় লাগে। কিন্তু আমরা তো ডুপ্লিকেট বানাব না। বড়দিন আসছে, আমরা কেক বানাব। সেই কেক খেয়ে তোমাদের (BJP-কে) হজম করব।’’
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। তাঁর অভিযোগ, কমিশনের অফিসে বিজেপি নিজেদের লোক বসিয়ে রেখেছে এবং অনলাইনে ইচ্ছেমতো নাম বাতিল করা হচ্ছে। ২০০২ সালের তথ্যের ভিত্তিতে ভোটার যাচাইয়ের প্রক্রিয়াকে ‘অবাস্তব’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘একজন ভোটার ২০০২ সালে যে ঠিকানায় ছিলেন, আজ সেখানে না-ও থাকতে পারেন। বিয়ের পর মেয়েদের ঠিকানা বদলায়, কেউ পদবি বদলায়। সামান্য বানান ভুলের জন্য (যেমন ‘এ’-র জায়গায় ‘ই’) বা ঠিকানা বদলের কারণে বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। গরিব মানুষ, হকার বা বস্তিবাসী এত ইংরেজির জটিলতা বুঝবেন কী করে?’’
মমতার অভিযোগ, বিজেপি (BJP) প্রায় দেড় কোটি নাম ভোটার তালিকা (Voter list) থেকে বাদ দেওয়ার চক্রান্ত করছে। কমিশনকে বিঁধে তিনি বলেন, ‘‘এমন নির্লজ্জ কমিশন আমি জীবনে দেখিনি। বিএলও-দের দোষ দিয়ে লাভ নেই, দোষ কমিশনের। এই অপরিকল্পিত কাজের দায় নিতে হবে।’’
এসআইআর প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম মেধা বা এআই (AI)-এর ব্যবহার নিয়েও গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, প্রযুক্তির অপব্যবহার করে ভোটার তালিকায় কারচুপি করা হতে পারে। কর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘‘শুনলাম এখন এআই ব্যবহার হচ্ছে। দেখা গেল আমি ভোট দিতে গিয়ে দেখলাম, এআই দিয়ে আমার নামেই আরেকটা ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’ তুলে রাখা হয়েছে। ফলে আমি আর ভোট দিতে পারলাম না। তাই বুদ্ধি খরচ করে কাজ করতে হবে।’’
প্রায় এক ঘণ্টার বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, যতই ভয় দেখানো হোক, তিনি মানুষের হয়ে কথা বলবেনই। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘চালাকি করে মহৎ কাজ হয় না। বাংলা না থাকলে দেশটা থাকবে না, এটা মনে রাখবেন।’’