ভোটার তালিকায় বড়সড় বিভ্রাট! একগুচ্ছ দাবি নিয়ে কমিশনে ক্ষোভ উগড়ে দিল তৃণমূল

December 23, 2025 | 2 min read

Authored By:

Saikat Saikat
Published by: Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:৩১:  ভোটার তালিকায় নাম তোলা এবং সংশোধনের প্রক্রিয়া নিয়ে বড়সড় বিভ্রাটের অভিযোগ। মঙ্গলবার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (CEO)-এর দ্বারস্থ হল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। এদিন নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে গিয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, পুলক রায়, পার্থ ভৌমিক এবং বাপি হালদার। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে কমিশনের ভূমিকা এবং ভোটার তালিকার অসঙ্গতি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।

এদিন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিনের ভোটারদের নাম হঠাৎ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে এবং তাঁদের নতুন করে ‘ফর্ম ৬’ পূরণ করতে বলা হচ্ছে। তিনি বলেন, “একজন মানুষ এতদিন ভোট দিয়েছেন, অথচ এখন তাঁকে বলা হচ্ছে তিনি ম্যাপে নেই। তাঁকে আবার নতুন করে ভোটার হতে হবে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং একজন ভোটারের পক্ষে অসম্মানজনক। গণতান্ত্রিক দেশে এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটা কেবল নথিপত্রের বিষয় নয়, এটা মানুষের হয়রানি।”

পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant worker) নাম যাচাইয়ের ক্ষেত্রেও কমিশনের পদ্ধতির সমালোচনা করেন চন্দ্রিমা। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “পরিযায়ী শ্রমিকরা জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে থাকেন। তাঁদের হঠাৎ নির্দিষ্ট দিনে ডেকে পাঠানো হচ্ছে। কাজ ছেড়ে তাঁরা কীভাবে আসবেন? তাঁদের যাতায়াতের খরচ বা কাজ হারানোর দায় কি কমিশন নেবে?” তৃণমূলের দাবি, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট ব্যবস্থা (SOP) বা অ্যাপ তৈরি করা হোক এবং তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তথ্য যাচাই করা হোক।

বৈঠকে পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmik) নিজের বিধানসভা এলাকা নৈহাটির উদাহরণ টেনে বলেন, “জীবিত মানুষকে মৃত বলে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। আমার এলাকাতেই তিনজন জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখানো হয়েছে।” প্রতিনিধি দলটি জানায়, সারা বাংলা থেকে এমন ১৫-২০টি নমুনা কেস তাঁরা কমিশনের কাছে জমা দিয়েছেন যেখানে জীবিতকে মৃত দেখানো হয়েছে বা যাঁরা স্থান পরিবর্তন করেননি তাঁদের ‘শিফটেড’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ভোটার তালিকা সংশোধনের শুনানির স্থান নিয়েও কমিশনের কাছে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে তৃণমূল (TMC)। শশী পাঁজা (Shashi Panja) জানান, মানুষকে যাতে দূরে যেতে না হয়, সেই দাবি জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আগে পঞ্চায়েত অফিস, স্কুল বা মিউনিসিপালিটিতে শুনানি হতো। বিরোধীরা যদি মনে করেন রাজ্য সরকারি অফিসে নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে না, তবে কমিশন ব্যাংক বা পোস্ট অফিসে ক্যাম্প করুক। কিন্তু তা যেন গ্রামের মধ্যেই হয়, যাতে সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার না হতে হয়।”

পাশাপাশি, বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) সাম্প্রতিক মন্তব্যেরও কড়া সমালোচনা করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “শান্তনু ঠাকুর নিজেই বুঝতে পারছেন যে তিনি মতুয়া সম্প্রদায়ের ওপর কত বড় বিপদ ডেকে এনেছেন। বহু মতুয়া মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে, যার ফলে তাঁদের নাগরিকত্ব নিয়েই প্রশ্নচিহ্ন ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।”

তৃণমূলের প্রতিনিধি দল আরও দাবি জানায়, রাজ্যের ৮১টি বিধানসভা কেন্দ্রে যে ‘বেসলাইন সার্ভে’ হচ্ছে, তার ভিত্তি কী তা স্পষ্ট করতে হবে। পাশাপাশি, যত অনলাইন আবেদন জমা পড়ছে, তার সম্পূর্ণ তালিকা রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে তুলে দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে কমিশনের কাছে। কমিশনের দেওয়া সময়সীমা বাড়ানো সত্ত্বেও পরিকাঠামোগত প্রস্তুতির অভাবে শুনানি ঠিকমতো হচ্ছে না বলেও অভিযোগ তুলেছে শাসকদল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen