যোগীরাজ্যে চার্চে ঢুকে ফাদারের ঘাড় ধরে হুমকি! অভিযুক্তর পরিচয় জানলে চমকে উঠবেন
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৫১: বড়দিন যত এগিয়ে আসছে, দেশের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগ তত জোরালো হচ্ছে। আরএসএস (RSS) প্রধান মোহন ভাগবতের ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ গঠনের ডাকের মাঝেই এবার যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এল। খোদ চার্চের ভেতরে ঢুকে এক ফাদারের ঘাড় ধরে হুমকি দেওয়ার হাড়হিম করা ভিডিও ছড়িয়ে পড়ল সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর এই ঘটনায় অভিযুক্ত তথাকথিত ‘হিন্দু ধর্মের রক্ষক’ আদতে এক ধর্মান্তরিত যুবক, যিনি অতীতে বাংলাদেশের বিতর্কিত ব্লগার ছিলেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, গাজিয়াবাদের (Ghaziabad) একটি চার্চে পেস্টর রাজু সদাশিবমের ঘাড় ধরে শাসাচ্ছেন সত্যনিষ্ঠ আর্য নামের এক যুবক। ফাদারকে প্রশ্ন করা হচ্ছে খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থের নাম নিয়ে। ফাদার রাজু ‘বাইবেল’-এর নাম করতেই সত্যনিষ্ঠের দাবি, এই ধর্মগ্রন্থ ভারতে লেখা নয়, তাই ভারতের মাটিতে বসে এই গ্রন্থ পড়া যাবে না। এখানেই শেষ নয়, যিশুর জন্ম নিয়ে অশালীন প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি রাজুর স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে প্রকাশ্যে কুরুচিকর ও অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করতেও দেখা যায় ওই যুবককে।
ঘটনার গভীরে গিয়ে জানা গিয়েছে অভিযুক্তের আসল পরিচয়। তথাকথিত এই হিন্দু ধর্ম প্রচারক সত্যনিষ্ঠ আর্য আদতে বাংলাদেশের প্রাক্তন ব্লগার সানেয়ুর রহমান। বাংলাদেশে কুরুচিকর ব্লগিংয়ের জন্য জনরোষের মুখে পড়ে তিনি সীমান্ত টপকে ভারতে পালিয়ে আসেন। এরপর উত্তরপ্রদেশে এসে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন এবং নাম পাল্টে হন ‘সত্যনিষ্ঠ আর্য’। বর্তমানে তিনি নিজেকে কট্টর হিন্দুত্ববাদী প্রচারক হিসেবে তুলে ধরছেন।
আরএসএস-এর শতবর্ষ উপলক্ষে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার প্রচার যখন তুঙ্গে, ঠিক সেই সময়েই এমন ঘটনা সংখ্যালঘুদের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। বিশেষত বড়দিনের আগে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ওপর এমন আক্রমণাত্মক আচরণের তীব্র নিন্দা করেছে উত্তরপ্রদেশের খ্রিস্টান সমাজ। তাঁদের দাবি, এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং রীতিমতো পরিকল্পনা করে ভয় দেখানো হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই নেটিজেনদের একাংশ সরব হয়েছেন। একজন বিদেশি অনুপ্রবেশকারী (যিনি ধর্মান্তরিত হয়েছেন) কীভাবে ভারতের একজন নাগরিককে এদেশে কী পড়া যাবে আর কী যাবে না- তা নিয়ে ফতোয়া দিতে পারেন, সেই প্রশ্নও উঠছে। তবে ঘটনার ভিডিও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ। পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরাও।