SIR আবহে শান্তনু ঠাকুরের মন্তব্যে ‘রণক্ষেত্র’ ঠাকুরনগরের মতুয়া বাড়ি

December 24, 2025 | 2 min read

Authored By:

Ritam Ritam

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৪০: মন্তব্যের বিরুদ্ধে শান্তনু ঠাকুরের মন্তব্যে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি ঠাকুর নগরে। নাগরিকত্বের নামে মতুয়াদের সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছেন শান্তনু! এমনটাই অভিযোগ তুলে মতুয়া বাড়ির সামনে স বিক্ষোভ দেখাতে থাকে মতুয়ারা। বেলা বাড়তেই উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। বিক্ষোভের সময় অবশ্য বাড়িতে ছিলেন না শান্তনু ঠাকুর।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের একটি বিতর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল ঠাকুরনগর। সম্প্রতি শান্তনু ঠাকুর মন্তব্য করেছিলেন, “ভোটার তালিকা থেকে ৫০ লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিমের নাম বাদ দিতে গিয়ে যদি ১ লক্ষ মতুয়ার নামও কাটা পড়ে, তবে তা মেনে নেওয়া হবে।” মন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিবাদেই তাঁর বাড়ির সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভে শামিল হন মতুয়া সম্প্রদায়ের (Matua community) একাংশ।

অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভে হঠাৎই চড়াও হয় শান্তনু ঠাকুরের অনুগামীরা। দু’পক্ষের সংঘর্ষে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ঠাকুরবাড়ি চত্বরে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের (Mamata Thakur) দাবি, বিজেপির (BJP) বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিকাশ ঘোষের নেতৃত্বে একদল দুষ্কৃতী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় এবং বেধড়ক মারধর করে। এই হামলায় অন্তত ৫ জন মতুয়া ভক্ত আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ঘটনার জেরে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

মতুয়া ভোটারদের নাম বাদ পড়া নিয়ে শান্তনু ঠাকুরকে (Shantanu Thakur) তীব্র ভর্ৎসনা করল তৃণমূল (TMC)। মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রায় এক লক্ষ মানুষের নাম ভোটার তালিকার খসড়া থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কার মাঝেই বিজেপি (BJP) সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) ভূমিকা নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানাল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। বুধবার দলের X (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে একটি পোস্টের মাধ্যমে শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের এবং বিপদের সময় মতুয়াদের পরিত্যাগ করার অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের শাসক দল।

তৃণমূলের অভিযোগ, মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা যখন তাঁদের ভোটাধিকার নিয়ে চিন্তিত, তখন তাঁদের পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টে দায় এড়াচ্ছেন বনগাঁর সাংসদ। এআইটিসি-র (AITC) দাবি অনুযায়ী, নাম বাদ পড়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শান্তনু ঠাকুর নাকি পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, “আমার কাছে জবাবদিহি আসবে কেন? নির্বাচন কমিশনের কাছে জবাব চাইবে। আমার কাছে জবাব চাইতে আসবে কোন কারণে মতুয়ারা? আমি কি মতুয়াদের বাদ দিচ্ছি? কে বাদ দিচ্ছে?।”

তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি কীভাবে এমন কথা বলতে পারেন? পোস্টে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি এই মতুয়া সম্প্রদায়ের কাছেই ভোট চেয়েছিলেন, আজ ভোটার তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ যাওয়ার সময় তিনি কীভাবে দায় অস্বীকার করতে পারেন?”

তৃণমূলের অভিযোগ, যখন ভোটার তালিকার সমীক্ষা বা নিউমারেশন প্রক্রিয়া চলছিল এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল, তখন শান্তনু ঠাকুর লন্ডনে ছুটি কাটাচ্ছিলেন।নাগরিকত্বের নামে ভুয়ো ক্যাম্প চালানো, সাধারণ মানুষের থেকে টাকা নেওয়া এবং মিথ্যে আশা দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও আনা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে শান্তনু ঠাকুর নাকি সংবাদমাধ্যমে এমনও বলেছিলেন যে, এক লক্ষ নাম বাদ গেলেও তা ‘গ্রহণযোগ্য’।

শান্তনু ঠাকুর ঠাকুরবাড়ির সদস্য এবং সাংসদ হিসেবে বারবার মতুয়াদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে কোনও সমস্যা হলে তিনি দেখবেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর এই ‘পালিয়ে যাওয়া’র মনোভাবকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে দাগিয়ে দিয়েছে তৃণমূল (TMC)।

তৃণমূলের কড়া বার্তা, “ভোটের জন্য বিশ্বাস ও আবেগকে ব্যবহার করে এখন গণতান্ত্রিক অধিকার বিপন্ন হওয়ার সময় সরে দাঁড়ানো দ্বিচারিতা ছাড়া আর কিছু নয়। এই বঞ্চনা মতুয়া সমাজ ভুলবে না।”

 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen