‘দু’দিন থাকলেই সংক্রমণ হয়’, দূষণ নিয়ে গড়করির মন্তব্যে অস্বস্তিতে দিল্লির BJP সরকার
Authored By:
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৫৮: দিল্লির বিষাক্ত বাতাস থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কেউই, এমনকি খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও। এবার দিল্লির দূষণ নিয়ে কার্যত অসহায়তার সুর শোনা গেল কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রী নীতিন গড়করির (Nitin Gadkari) গলায়। বুধবার তিনি প্রকাশ্যে মেনে নেন, “দিল্লিতে মাত্র দু’দিন থাকি, তাতেই সংক্রমণ হয়।” যেহেতু বর্তমানে দিল্লিতে ক্ষমতায় রয়েছে গড়করির নিজের দল বিজেপি (BJP) এবং মুখ্যমন্ত্রী পদে রয়েছেন রেখা গুপ্তা (Rekha Gupta), তাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই অকপট স্বীকারোক্তি স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি বাড়াল রাজ্য প্রশাসনের। অন্যদিকে, এই পরিস্থিতির মধ্যেই এয়ার পিউরিফায়ার থেকে সাময়িকভাবে জিএসটি (GST) কমানোর বিষয়ে কেন্দ্রের মতামত জানতে চাইল দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)।
বুধবার প্রবীণ সাংবাদিক উদয় মাহুরকরের একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নীতিন গড়করি। সেখানেই জাতীয়তাবাদের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “আজকের দিনে জাতীয়তাবাদের সবথেকে বড় কাজ হল দেশের রপ্তানি বৃদ্ধি করা এবং আমদানি কমানো।” এরপরই দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমি এখানে মাত্র দু’দিন থাকি এবং তারপরেই সংক্রমণ হয়। কেন দিল্লি এমন ভয়ানক দূষণের কবলে পড়ছে?”
নিজ দপ্তরের দায় স্বীকার করে এদিন রীতিমতো বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমি পরিবহণ মন্ত্রী। ৪০ শতাংশ দূষণ আমাদেরই কারণে বা জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে হয়। আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানি করে দূষণ বাড়াতে ২২ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করছি। এটা কোন ধরনের জাতীয়তাবাদ?” গড়করি আক্ষেপ করে জানান, মানুষ এখনও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি গ্রহণে প্রস্তুত নয়। তাঁর প্রশ্ন, “আমরা কি বিকল্প জ্বালানি এবং জৈব জ্বালানি দিয়ে আত্মনির্ভর ভারত তৈরি করতে পারি না?”
মন্ত্রীর এই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ার পাশাপাশি, দূষণ মোকাবিলায় আইনি তৎপরতাও তুঙ্গে। গত সোমবার দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি দেবেন্দ্র কুমার উপাধ্যায় এবং বিচারপতি তুষার রাও গাডেলের বেঞ্চে দূষণ সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয়। ওই মামলায় আবেদন জানানো হয়, বর্তমান আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এয়ার পিউরিফায়ার-সহ জরুরি মেডিক্যাল সরঞ্জামগুলিকে ৫ শতাংশ জিএসটি স্ল্যাবের আওতায় আনা হোক।
শুনানি শেষে বিচারপতিদের বেঞ্চ উদ্বেগের সঙ্গে মন্তব্য করে, “আমরা দিনে ২১ হাজার বার শ্বাস নিই, ভাবুন শরীরের কতখানি ক্ষতি হচ্ছে!” এরপরেই এয়ার পিউরিফায়ারে জিএসটি (GST) কমানোর বিষয়ে কেন্দ্রের সুনির্দিষ্ট মতামত চেয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। সব মিলিয়ে, দিল্লির দূষণ (Pollution in Delhi) পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক ও আইনি- উভয় ক্ষেত্রেই চাপ বাড়ল কেন্দ্রের ওপর।