আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না, ইউনূসকে বার্তা মার্কিন সাংসদদের
Authored By:
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:১৪: বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া। এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লিগকে (Awami League) নিষিদ্ধ করা বা নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে তাদের বাদ দেওয়ার সম্ভাবনার বিরুদ্ধে এবার সরব হলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ প্রভাবশালী আইনপ্রণেতা। তাঁদের স্পষ্ট বার্তা-একটি প্রধান রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে কখনোই অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে মার্কিন হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির প্রতিনিধি গ্রেগরি ডব্লিউ মিকস (Gregory W. Meeks) এবং সাউথ ও সেন্ট্রাল এশিয়া বিষয়ক সাব-কমিটির চেয়ারম্যান বিল হুইজেঙ্গা ও র্যাঙ্কিং সদস্য সিডনি কামলেজার-ডোভ যৌথভাবে ড. ইউনূসকে একটি দীর্ঘ চিঠি পাঠিয়েছেন। এই চিঠির সহ-স্বাক্ষরকারী হিসেবে রয়েছেন প্রতিনিধি জুলি জনসন এবং টম সুয়োজ্জি।
চিঠিতে মার্কিন আইনপ্রণেতারা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রস্তাবিত নির্বাচনের আগে কোনও রাজনৈতিক দলকে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের (Bangladesh) এই ক্রান্তিলগ্নে ড. ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণকে তাঁরা স্বাগত জানান। কিন্তু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে সব রাজনৈতিক মতাদর্শের পক্ষের সঙ্গে কাজ করা অত্যন্ত জরুরি। ব্যালট বাক্সে যাতে জনগণের প্রকৃত মতামতের প্রতিফলন ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
মার্কিন সাংসদরা সতর্ক করে বলেছেন, “আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধ বা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে কোনও একটি রাজনৈতিক দলের সব কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী।” তাঁরা আরও উল্লেখ করেন, সমষ্টিগত দায়ের পরিবর্তে ব্যক্তিগত ফৌজদারি দায়বদ্ধতার নীতি অনুসরণ করাই ন্যায়বিচারের মাপকাঠি।
চিঠিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT) পুনরায় চালু করার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। যদি সরকার রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম স্থগিত করে কিংবা ত্রুটিপূর্ণ বিচার প্রক্রিয়া চালায়, তবে গণতান্ত্রিক লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না বলে তাঁরা মত দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মার্কিন এমপিদের এই চিঠির ঠিক আগেই চার ব্রিটিশ এমপি ড. ইউনূসকে প্রায় একই মর্মে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেখানেও তাঁরা উল্লেখ করেছিলেন যে, আওয়ামী লিগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা গণতন্ত্রের জন্য সুখকর হবে না এবং আন্তর্জাতিকভাবেও সেই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
পরপর ব্রিটেন ও আমেরিকার আইনপ্রণেতাদের এই চিঠিতে স্পষ্ট যে, বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব। ফলে আওয়ামী লিগকে নির্বাচনের বাইরে রাখার যে গুঞ্জন বা দাবি উঠছিল, তা বাস্তবায়নে বড়সড় আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।