সিঙ্গুরে কর্মসংস্থানের নবদিগন্ত! ৫০০ কোটির লগ্নির ছাড়পত্র মমতার মন্ত্রিসভায়
Authored By:
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২১:৪৫: একসময় যে জমি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতির পালাবদল ঘটেছিল, সেই সিঙ্গুরেই এবার বড়সড় বিনিয়োগের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। টাটাদের বিদায়ের প্রায় দেড় দশক পর, বুধবার নবান্নে (Nabanna) রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিঙ্গুরে ৫০০ কোটি টাকার একটি ওয়্যারহাউস বা পণ্য মজুত ভাণ্ডার প্রকল্পে সিলমোহর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
২০০৮ সালের অক্টোবরে টাটা গোষ্ঠী যখন সিঙ্গুর ছেড়ে বিদায় নেয়, তখন তৎকালীন বাম সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘শিল্পবিরোধী’ তকমা দিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার সাড়ে ১৪ বছর পর, সেই সিঙ্গুরেই নতুন লগ্নির দরজা খুলে দিলেন তিনি। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) জানান, নাহার ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড নামের একটি সংস্থাকে এই প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এই প্রকল্পের জন্য সংস্থাকে ৯৯ বছরের লিজে ১১.৩৫ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। এখানে তৈরি হবে আধুনিক মানের ওয়্যারহাউস। সরকারের আশা, এই প্রকল্পটি চালু হলে রাজ্যে অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্টের মতো ই-কমার্স সংস্থাগুলির পরিষেবা আরও মসৃণ হবে। পাশাপাশি, স্থানীয় স্তরে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ তৈরি হবে।
সিঙ্গুরের পাশাপাশি রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিকাঠামো নিয়েও বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা। ভবিষ্যতে বিদ্যুতের বর্ধিত চাহিদার কথা মাথায় রেখে পিপিপি (PPP) মডেলে ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ‘নিউ সুপার ক্রিটিক্যাল থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট’ তৈরির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। নিলাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জেএসডাব্লিউ (JSW) এনার্জি লিমিটেড এই প্রকল্পের বরাত পেয়েছে। তারা প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ৫.৮১ টাকা দরে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে। জানা গিয়েছে, ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট তৈরি হবে। তবে প্রকল্পের জন্য জমি নির্বাচন এবং অধিগ্রহণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সংস্থাটিকেই নিতে হবে।
রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে গতি আনতে এদিন বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে জমি বন্টনেও অনুমোদন দেওয়া হয়।
* জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি পার্ক (হাওড়া, অঙ্কুরহাটি): দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ০.৫ একর জমি বরাদ্দ, যেখানে কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে উঠবে। এছাড়া ডোমজুড়ে অফিস স্পেসের জন্য ২০,২৬০ বর্গফুট জায়গা দেওয়া হয়েছে।
* জঙ্গল সুন্দরী কর্মনগরী: ১৫৫ একর জমি বরাদ্দ।
* বিদ্যাসাগর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক: ৩০.৪২ একর।
* হরিণঘাটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক: ২.৭৭ একর।
* পানাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক: ১.৩৭ একর।