ছাব্বিশের লক্ষ্যে শুরু তৃণমূলের ‘উন্নয়নের সংলাপ’, মোদীর ‘বিজেপি তাই’-এর পালটা অভিষেকের ‘বিজেপি বাই’
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২১.০০: ছাব্বিশের ভোটকে পাখির চোখ করে ময়দানে নামল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। একদিকে যেমন ১৫ বছরের কাজের খতিয়ান নিয়ে মানুষের দুয়ারে পৌঁছানোর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এর সঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) স্লোগানকে কটাক্ষ করে বাঁধলেন দলের নতুন স্লোগান। শুক্রবার দলীয় বৈঠকে অভিষেক সাফ জানিয়ে দিলেন, মোদীর ‘বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই’-এর পালটা স্লোগান হবে, ‘বাঁচতে চাই, তাই বিজেপি বাই’।
দিন কয়েক আগেই নদিয়ার তাহেরপুরের সভায় ভার্চুয়াল বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী স্লোগান তুলেছিলেন, ‘বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই’। শুক্রবার সেই প্রসঙ্গ টেনেই অভিষেক বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আসলে বলতে চেয়েছেন, আত্মসমর্পণ করে বিজেপিতে যোগ দিন। নইলে ছাড়ব না। কিন্তু এ সব করে কিছু হবে না।’’ এরপরই দলের কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘আমরা বলছি, বাঁচতে চাই, তাই বিজেপি বাই।’’ পাশাপাশি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে দলের মূল স্লোগানও বেঁধে দেন সেনাপতি- ‘মানবে হার, আবার তৃণমূল সরকার’।
এদিন ভার্চুয়াল বৈঠকে দলের বিধায়ক এবং নেতৃত্বের সামনে ‘উন্নয়নের সংলাপ’ নামে নতুন কর্মসূচির নীল নকশা তুলে ধরেন অভিষেক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সম্প্রতি সরকারের ১৫ বছরের কাজের খতিয়ান বা ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ প্রকাশ করেছেন। ১লা জানুয়ারি থেকে সেই রিপোর্ট কার্ড এবং মুখ্যমন্ত্রীর লেখা চিঠি নিয়েই ‘মমতার দূত’ হয়ে বাড়ি বাড়ি যাবেন তৃণমূল নেতারা।
জনসংযোগের ক্ষেত্রে দলীয় কর্মীদের আচরণের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর কড়া বার্তা, ‘‘মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় কোনও ঔদ্ধত্য দেখানো যাবে না। মনে রাখবেন, আপনার ব্যবহারের মধ্যেই মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংগ্রামকে দেখতে পাবে।’’
তৃণমূল (TMC) সূত্রে খবর, এই কর্মসূচির জন্য প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে তিনটি করে দল গঠন করা হবে। প্রতি দলে থাকবেন ৫-১০ জন সদস্য, যার মধ্যে বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও পুরপ্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতারা থাকবেন। রাজ্যজুড়ে প্রায় ১৮০০ জন ‘প্রভাবী’ বা ইনফ্লুয়েন্সারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০ জনের কাছে সরাসরি যাবেন মন্ত্রী ও সাংসদরা, বাকিদের কাছে পৌঁছবেন বিধায়ক ও জেলা সভাপতিরা। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে বিশেষ কিট, যাতে থাকবে উন্নয়নের খতিয়ান।
আরও পড়ুন: টার্গেট ২৬ শের ভোট, SIR কর্মসূচির মাঝেই জানুয়ারিতে রাজ্যজুড়ে প্রচারে নামছেন অভিষেক
দিল্লির বঞ্চনা নিয়েও এদিন সুর চড়ান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি কোনও রিপোর্ট কার্ড পেশ করতে পারেনি। কিন্তু আমাদের সৎ সাহস আছে, তাই আমরা কাজের খতিয়ান নিয়ে মানুষের কাছে যাচ্ছি। আমরা দিল্লির নেতাদের কাছে নয়, বাংলার ১০ কোটি মানুষের কাছে হিসাব দিতে রাজি।’’ ২০২১-এর হারের পর থেকে কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে রেখেছে, এই বার্তা প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি।
জানুয়ারি মাস থেকেই অভিষেক নিজে জেলা সফরে বেরবেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। তার আগে এই ‘উন্নয়নের সংলাপ’ কর্মসূচি দিয়ে দলের সংগঠনকে চাঙ্গা করাই এখন লক্ষ্য তৃণমূল সেনাপতির।