ভোটার তালিকায় ২০০২-এর জট! নিজেদের ‘ত্রুটি’ স্বীকার করে কী জানাল কমিশন?

December 27, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২১:৫০: ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়ায় শুনানির নোটিস পাচ্ছিলেন বহু সাধারণ ভোটার। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়ার পর অবশেষে স্বস্তির খবর দিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। শনিবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (CEO) দপ্তর সমস্ত জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে নিজেদের ‘ত্রুটি’র কথা স্বীকার করে নিয়েছে। কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, ২০০২ সালের তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের ডাক পড়লেও শুনানিতে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।

কেন এই বিভ্রান্তি?

কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, বিএলও (BLO) অ্যাপে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণেই এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। অ্যাপে অনেক ভোটারের তথ্যে ‘নো ম্যাপিং’ (No Mapping) দেখাচ্ছে। অর্থাৎ, ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে বর্তমান ভোটারের তথ্যের ডিজিটাল সংযোগ বা ‘ম্যাপিং’ করা যায়নি। কমিশন মেনে নিয়েছে, কম্পিউটার বা মোবাইল অ্যাপে তথ্য সঠিকভাবে ধরা না পড়ায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই গড়মিলে সংশ্লিষ্ট ভোটারের কোনও দোষ নেই, এটি সম্পূর্ণ প্রযুক্তিগত ত্রুটি।

কমিশনের নির্দেশিকা

শনিবার জেলাশাসকদের পাঠানো চিঠিতে পরিস্থিতি সামাল দিতে একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে…

১. ২০০২ সালের SIR তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, তাঁদের শুনানির জন্য ডাকা হবে না বা নোটিস পাঠানো হবে না।
২. যদি ভুলবশত বা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কোনও ভোটার শুনানির নোটিস পান, তবে তাঁদের আতঙ্কিত হওয়ার বা শুনানিতে উপস্থিত হওয়ার দরকার নেই।
৩. জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (DEO), ERO বা এইআরও-রা ২০০২ সালের পুরনো তালিকার কাগজ দেখে ম্যানুয়ালি তথ্য যাচাই করবেন এবং নিজেরাই ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করে বিষয়টি মিটিয়ে দেবেন।

যাচাই প্রক্রিয়ার সুবিধার্থে কমিশন আরও জানিয়েছে, প্রয়োজনে বুথস্তরের আধিকারিকরা (BLO) সংশ্লিষ্ট ভোটারের বাড়িতে যেতে পারেন। তিনি গিয়ে ভোটারের একটি ছবি তুলে তা অনলাইনে আপলোড করবেন। প্রমাণ হিসেবেই এই ছবি রাখা হবে।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালের তথ্য জমা দেওয়ার পরেও শুনানির নোটিস পাঠানোয় রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। এরপরেই তড়িঘড়ি ভুল স্বীকার করে জেলাশাসকদের এই নির্দেশিকা পাঠিয়ে আশ্বস্ত করল কমিশন।

উল্লেখ্য, এসআইআর-এর খসড়া ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের পরিবারের চার জনকে শুনানিকেন্দ্রে হাজির হতে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। ওই নোটিসে তাঁর দুই ছেলের পাশাপাশি নবতিপর মা ও বোনের নামও ছিল। বিষয়টি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হতেই নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে জানায়, সাংসদের বৃদ্ধা মাকে শুনানির জন্য বাইরে যেতে হবে না। প্রয়োজনে কমিশনের পক্ষ থেকে তাঁর বাড়িতেই গিয়ে শুনানি করা হবে। তবে পরিবারের বাকি তিন জনকে নিয়ে কমিশন আলাদা করে কোনও অবস্থান স্পষ্ট করেনি। ফলে মনে করা হচ্ছে, তাঁদের শুনানিকেন্দ্রে উপস্থিত থাকতেই হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen