দুধ উৎপাদনে এগিয়ে বাংলা, পিছনে তেলঙ্গানা-ওড়িশা সহ একাধিক রাজ্য

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০.১০: বাংলার দুগ্ধ উৎপাদন মানচিত্রে নীরবে কিন্তু দৃঢ় পায়ে এগোচ্ছে রাজ্য। পরিসংখ্যানই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। ২০১১ সালে যেখানে রাজ্যের দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৪৭২ টন, সেখানে বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৬৫০ টনে। এই ধারাবাহিক অগ্রগতির জেরে দুধ উৎপাদনে তেলঙ্গানা, মেঘালয়, সিকিম ও ওড়িশার মতো একাধিক রাজ্যকে পিছনে ফেলেছে পশ্চিমবঙ্গ।
এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে রাজ্যের প্রাণী বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের গবেষণা ও নিরলস প্রচেষ্টা। সেই গবেষণারই স্বীকৃতি মিলল সম্প্রতি ন্যাশনাল আকাডেমি অফ ভেটেরিনারি সায়েন্সের সম্মেলনে। বিহারের পাটনায়, বিহার প্রাণী বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইসিএআর-এর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (অ্যানিম্যাল সায়েন্স) ড. রাঘবেন্দ্র ভট্ট।
সম্মেলনে ভেটেরিনারি শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। বর্তমানে স্নাতক স্তরে এক বছরের ইন্টার্নশিপ-সহ সাড়ে পাঁচ বছরের পাঠ্যক্রম থাকায় জাতীয় স্তরের স্নাতকোত্তর প্রবেশিকা পরীক্ষায় পড়ুয়ারা এক বছর পিছিয়ে পড়ছেন। এই সমস্যা দূর করতে পাঠ্যক্রম পাঁচ বছরে শেষ করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে বলে জানান ড. ভট্ট।
আলোচনায় উঠে আসে দেশের দুধ উৎপাদনের চমকপ্রদ ছবিও। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারত প্রায় ২৪৭.৮৭ মিলিয়ন টন দুধ উৎপাদন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পিছনে ফেলেছে। দেশের মোট দুধের ৪৩ শতাংশ আসে মোষের দুধ থেকে, আর বিশ্বের মোট মোষের দুধের ৭৬ শতাংশই ভারতের অবদান।
সম্মেলনে বিহারের প্রাণিসম্পদ ও মৎস্যমন্ত্রী সুরেন্দ্র মেহতা-সহ দেশের নানা প্রান্তের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এই অনুষ্ঠানেই ভেটেরিনারি শিক্ষা ও গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য ২০ জনকে আকাডেমির সর্বোচ্চ সম্মান ফেলোশিপ প্রদান করা হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন রাজ্যের প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ভাইরোলজিস্ট সিদ্ধার্থ জোয়ারদার।
দুধ উৎপাদন থেকে গবেষণা—সব মিলিয়ে বাংলা যে ধীরে ধীরে জাতীয় স্তরে নিজের জায়গা পোক্ত করছে, তা আর অস্বীকার করার উপায় নেই।