“যাঁরা ধর্ষকদের বরণ করেন, তাঁদের মুখে নারী সুরক্ষার কথা মানায় না,” শাহকে কড়া জবাব শশী পাঁজার

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:৪৫: মঙ্গলবার অমিত শাহ প্রেস কনফারেন্সে রাজ্যের নারী সুরক্ষা এবং শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে যে সব অভিযোগ তুলেছেন, তাকে ‘অসত্য’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja)। তাঁর মতে, বারবার বাংলায় এসে রাজ্যকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছেন অমিত শাহ (Amit Shah)।
নারী সুরক্ষা প্রসঙ্গে বিজেপিকে (BJP) তীব্র আক্রমণ করে শশী পাঁজা বলেন, “নারী সুরক্ষা নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির কিছু না বলাই উচিত। বাংলায় নারীরা সুরক্ষিত। এখানে কোনও রকম আক্রমণ বা নির্যাতনের প্রয়াস হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়। এটাই কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের পরিচয়।” তিনি রাজ্যের উৎসবের দিনগুলোর উদাহরণ টেনে বলেন, দুর্গাপূজা হোক বা বড়দিন-কোটি কোটি মানুষ এবং মহিলারা নির্বিঘ্নে রাস্তায় ঘোরেন, কোথাও কোনও নির্যাতনের ঘটনা শোনা যায় না। তিনি আরও অভিযোগ করেন, রাজ্যে ধর্ষণ রুখতে যে ‘অপরাজিতা বিল’ আনা হয়েছিল, তাকে আটকে রেখেছে কেন্দ্রই।
বিজেপি শাসিত রাজ্য এবং দলের নেতাদের আচরণের প্রসঙ্গ তুলে শশী পাঁজা বলেন, “বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে নারী সুরক্ষা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। আপনারা কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। আপনারা বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মালা পরিয়ে বরণ করেন, মিষ্টি খাওয়ান। এমনকি অলিম্পিক্সে যারা দেশের জন্য সোনার পদক আনল, সেই মেয়েদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগেও আপনারা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেননি। এটাই বিজেপির নারী সুরক্ষার নমুনা।”
শিল্প ও বিনিয়োগ নিয়েও অমিত শাহের দাবিকে নস্যাৎ করেছেন শশী পাঁজা। অমিত শাহ অভিযোগ করেছিলেন, বাংলায় সব কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর জবাবে পরিসংখ্যান তুলে ধরে শশী পাঁজা বলেন, “২০১১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় ১৩.৮ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। আপনারা চোখ বন্ধ করে থাকলে সত্যটা মিথ্যা হয়ে যাবে না।”
তিনি আরও জানান, সিমেন্ট, পেন্ট, আয়রন অ্যান্ড স্টিল এবং রেলওয়ে ওয়াগানের মতো একাধিক বড় শিল্পে লগ্নি এসেছে রাজ্যে। এমএসএমই (ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প) ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সারা ভারতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। শশী পাঁজার অভিযোগ, কেন্দ্র বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকে রাখলেও লগ্নিকারীরা বাংলার মাটিকেই বেছে নিচ্ছেন।
পরিশেষে অমিত শাহকে উদ্দেশ্য করে তাঁর বার্তা, “সত্যকে এড়িয়ে যাওয়া যায় না বা চাপা দেওয়া যায় না। সুতরাং বাংলায় এসে প্রতিবার বাংলাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করবেন না।”