‘SIR’ ও ‘লজিক্যাল ডিসক্রিপান্সি’র জট কাটাতে আজ দিল্লিতে কমিশনের মুখোমুখি অভিষেক
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:৫৪: ১ কোটি ৩৬ লক্ষ মানুষের ভোটাধিকার কি সংকটে? ‘লজিক্যাল ডিসক্রিপান্সি’ বা তথ্যের অসঙ্গতির দোহাই দিয়ে কাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদের মুখে? সবথেকে বড় প্রশ্ন- এই প্রক্রিয়ায় আদতে কতজন অনুপ্রবেশকারী বা রোহিঙ্গা চিহ্নিত হলেন? বাংলার মানুষের নাগরিকত্ব ও ভোটাধিকার সংক্রান্ত একাধিক জ্বলন্ত প্রশ্নের উত্তর চাইতে বুধবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সদর দপ্তরে পৌঁছচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। এই অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন খোদ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
বুধবার সকালেই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করবেন তাঁরা। তৃণমূল সূত্রে খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও এই ১০ জনের প্রতিনিধি দলে থাকছেন সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek O’Brien), কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee), নাদিমুল হক (Nadimul Haque), সাকেত গোখলে (Saket Gokhale), মমতা ঠাকুর (Mamata Thakur) এবং ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় (Ritabrata Banerjee)। এছাড়াও রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে থাকছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মানস ভুঁইয়া এবং প্রদীপ মজুমদার। বৈঠকের পর কমিশনের বাইরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনও করার কথা রয়েছে তৃণমূল প্রতিনিধিদের।
মঙ্গলবার দিল্লি রওনা হওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন অভিষেক। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি (BJP) রাজনৈতিক স্বার্থে ১ থেকে দেড় কোটি নাম বাদ দেওয়ার যে টার্গেট বেধে দিয়েছিল, কমিশন কি তবে সেই এজেন্ডা বাস্তবায়নেই নেমেছে? তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, যে ১ কোটি ৩৬ লক্ষ নামের তালিকায় অসঙ্গতির কথা বলা হচ্ছে, তা কমিশনকে প্রমাণ সহ দেখাতেই হবে।
এসআইআর (SIR) বা বিশেষ তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, তার জন্য অভিষেক সরাসরি বিজেপিকে দায়ী করেছেন। তাঁর দাবি, “ওদের তৈরি করা এই আতঙ্কের জেরে রাজ্যে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কমিশন কেন এখনও স্পষ্ট করছে না যে, এই মৃত বা চিহ্নিত ব্যক্তিদের মধ্যে ক’জন রোহিঙ্গা আর ক’জন বাংলাদেশি?” পাশাপাশি, আইবি প্রধান তপনকুমার ডেকার মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। অভিষেকের কথায়, “যাঁদের নজরদারির অভাবে অনুপ্রবেশ ঘটে, সেই আইবি চিফের মেয়াদ কোন কারণে বাড়ানো হচ্ছে? কেন্দ্র কী লুকোতে চাইছে?”
এর আগে গত শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেক পরিসংখ্যান তুলে ধরে কমিশনের ‘অতি তৎপরতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি বলেন, “১৬ ডিসেম্বর কমিশন জানাল ১ কোটি ৩৬ লক্ষ নামে অসঙ্গতি রয়েছে। কিন্তু ৮০ হাজার বিএলও (BLO)-কে দিয়ে মাত্র একদিনে সাত কোটি ডেটা যাচাই করা কি আদৌ সম্ভব? কমিশনের হাতে কি কোনও জাদুকাঠি আছে?”
তৃণমূলের স্পষ্ট দাবি, ‘লজিক্যাল ডিসক্রিপান্সি’র নামে যে তালিকা তৈরি হয়েছে, তা অবিলম্বে জনসমক্ষে আনতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।