১৭৯ কিমি সীমান্তে কাঁটাতারের প্রস্তাবই পাঠায়নি কেন্দ্র, শাহের অভিযোগ উড়িয়ে রিপোর্ট রাজ্যের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:৪৫: এরাজ্যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাত ফের তুঙ্গে। রাজ্যে অনুপ্রবেশ রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার জমি দিচ্ছে না বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) যে অভিযোগ তুলেছিলেন, প্রশাসনিক রিপোর্টে উঠে এল তার সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৭৯ কিলোমিটার অসুরক্ষিত সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার জন্য মোদি সরকার রাজ্যের কাছে এখনও কোনও সরকারি প্রস্তাবই (Formal Proposal) পাঠায়নি। এমনকি, রাজ্য মন্ত্রিসভা অনুমোদিত জমি কেনার টাকাও কেন্দ্রের তরফে বরাদ্দ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার বাঁকুড়ার জনসভা থেকে অমিত শাহ অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণেই সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার কাজ থমকে আছে এবং বিঘ্নিত হচ্ছে বিএসএফের (BSF) নজরদারি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই দাবিকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘বাংলার নামে অপপ্রচার’ বলে পালটা সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি স্পষ্ট জানান, রাজ্যের তরফে কোথায় কত জমি দেওয়া হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।
এই বাদানুবাদের মাঝেই সামনে এসেছে কাঁটাতারের জমি সংক্রান্ত প্রশাসনিক রিপোর্ট। সেই তথ্য অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশের ৫৬৩ কিলোমিটার অসুরক্ষিত সীমান্তের মধ্যে ৪৫০.৫ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতার দেওয়া সম্ভব। এর মধ্যে ২৭১ কিমি সীমান্তে বেড়া দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের তরফে ২,৭৯৫.৬৯ একর জমি চাওয়া হয়েছিল। রাজ্য মন্ত্রিসভা ইতিমধ্যেই ১,৪৬৩.০৯ একর জমি কেনার অনুমোদন দিয়েছে, যা দিয়ে ২৫৭.৪ কিমি সীমান্ত ঘেরা সম্ভব। সীমান্তবর্তী জেলায় বিএসএফ-কে ৩৮৩.৬৮ একর জমি হস্তান্তরও করা হয়েছে। কিন্তু বড় প্রশ্ন উঠছে বাকি ১৭৯ কিলোমিটার সীমান্ত নিয়ে। প্রশাসনিক মহলের দাবি, এই দীর্ঘ ১৭৯ কিমি সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার জন্য কত জমি প্রয়োজন, তার হিসেব বা প্রস্তাব কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের কাছে আসেইনি। প্রস্তাব না পেলে রাজ্যের পক্ষে বিএসএফ-এর হাতে জমি তুলে দেওয়া অসম্ভব।
রিপোর্টে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। রাজ্য মন্ত্রিসভা অনুমোদিত ২০২ একর জমির জন্য কেন্দ্রের তরফে এখনও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। বিশেষ সূত্রে খবর, ২৭১ কিলোমিটারের মধ্যে মাত্র ২২৭ কিমি অংশের জমি কেনার জন্য কেন্দ্র ৪৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে ১৭৭.২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে অতি সম্প্রতি, গত এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে।