এবার সূর্যমন্দিরে মা দুর্গার আরাধনা
সভ্যতার ঊষাকাল থেকেই মানুষ সূর্যের উপাসক। সূর্য দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে তৈরি হয়েছে সূর্যমন্দির। সূর্য মন্দিরের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলে খ্রিস্টজন্মের কয়েক হাজার বছর আগেও। গ্রিক সূর্যদেবতা হিলিয়াসের মতো এদেশেও সূর্য সেই কোন প্রাচীন কাল থেকেই উপাস্য।
ওড়িশার কোনারকের সূর্যমন্দির তো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী। এবার আহিরিটোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির পুজোমণ্ডপেও থাকছে সূর্যমন্দিরের আদল। তবে কোনও ইতিহাসাশ্রয়ী মন্দির নয়। এই ঘোর করোনা কালে অন্ধকারকে সরিয়ে আলোর দিকে ফিরতে তৈরি হচ্ছে শিল্পী শক্তি শর্মার কল্পনায় উদ্ভাসিত এক অভিনব সূর্যমন্দির। প্রতিমা নির্মাণেও রয়েছেন তিনিই।
এবছর এই ক্লাবের পুজো পা দিচ্ছে ৮১তম বছরে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সঞ্জয় চন্দ বলছিলেন, ‘‘পরিস্থিতির চাপে এবার পুজোর বাজেট একটু সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে। অন্যান্যবার পুজোর দিনগুলোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এবার বাদ রাখতে হয়েছে সেসবও। তবে আয়োজনে, নিষ্ঠায় যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে সেদিকে আমাদের নজর পুরোপুরি রয়েছে।’’
সরকারি বিধিনিষেধ মেনেই পুজো হবে। অন্যান্যবার দর্শনার্থীদের মণ্ডপের ভিতরে ঢোকানো হত। এবার সেটা বন্ধ। বাইরে থেকে প্রতিমা দর্শন করতে হবে। সংক্রমণের সতর্কতার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। দর্শনার্থীরা যাতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলেন, সেদিকেও নজর রাখা হবে। কমিটির সদস্য যাঁরা মণ্ডপের ভিতরে থাকবেন, তাঁদের জন্য বিশেষ স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা থাকবে। আর মাস্ক তো সকলের জন্যই বাধ্যতামূলক।
সারা বছরই নানা সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে আহিরিটোলা সর্বজনীন। ক’দিন আগেই কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল ক্লাবের তরফে। পুজোর সময় অন্যান্য পরিকল্পনা বাদ দিলেও সমাজসেবামূলক কিছু করার পরিকল্পনা বাদ দিতে চাইছেন না উদ্যোক্তারা। তবে এব্যাপারে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।