পুজোয় হরেক রকম রান্না নিয়ে বাড়ি বাড়ি হাজির গ্রামোন্নয়ন দপ্তর
বাঙালির ঘরোয়া রান্নায় রেস্তোরার ঝাঁঝ! সঙ্গে হোম ডেলিভারির সুবিধা। পুজোর কয়েকদিন এই যুগলবন্দিতেই শহরবাসীর হেঁসেলে তালা দেওয়ার পরিকল্পনা পাকা করে ফেলেছে রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন দপ্তর।
কী সেই পরিকল্পনা? ষষ্ঠী থেকে দশমীর আহারে নিশ্চয়তা। থালিতে রাখা হচ্ছে হরেক রেসিপি। সনাতনী নারকেল কোরা দিয়ে ছোলার ডালের সঙ্গে ক্রিমি চিকেন। ইলিশের বাহারি পদের সঙ্গে বাসন্তী পোলাও। লুচি, পায়েস, চাটনির সঙ্গে বেকড রসগোল্লা।
একেবারে সরকারি দপ্তরের পুজো স্পেশাল মেনু। সব মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় আট পদের থালি। খরচ সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা। গুপিবাঘার মতো হাততালি দিলে অবশ্য আসবে না খাবার। এখন প্রযুক্তির যুগ। হোয়াটস অ্যাপ করলেই বাড়ির দোড়গোড়ায় হাজির—‘ভোজ কয় যাহারে…!’ আর এই ভোজ ‘লাঞ্চ’ হলে ‘ডিনার’-এর থালিও মন্দ নয়। থাকছে বাঙালির ভোজনে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠা বিরিয়ানি। সঙ্গে চিকেন চাপের এলাহি আয়োজন। শুধু বাড়িতে পৌঁছে দেওয়াই নয়, কলকাতার ছ’টি পুজো মণ্ডপে খাবারের স্টল দিচ্ছেন উদ্যোক্তারা। সেখানেও মিলবে চিকেনের নানা পদের আস্বাদ।
এবারের পুজো হচ্ছে মহামারীর আবহে। তা বলে বাঙালির ভোজনে ত্রুটি কেন থাকবে? এই ভাবনা থেকেই গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের কম্প্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন(সিএডিসি) বাড়ি বাড়ি পুজো স্পেশাল খানা সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে দুর্গো পুজোতেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা ভাবা হয়েছে। সাফল্য মিললে চলতে পারে ভাইভোঁটা পর্যন্ত। সিএডিসি’র সচিব (প্রশাসনিক) সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব ফার্ম রয়েছে। সেখানেই চাল থেকে মুরগী, মাছ সবই উৎপাদন হয়। ফলে উন্নত গুণমানের খাবার আমরা দেব বাজারের থেকে কম দরে। এবারের করোনা পরিস্থিতিতে আম বাঙালি বাড়ি থেকে বের হওয়া একটা চ্যালেঞ্জ। সেই কারণেই আমরা বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিতে চাইছি। বিভাগীয় ব্র্যান্ডিং, করোনা পরিস্থিতিতে নির্ভরযোগ্য বিকল্প দেওয়া এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মসংস্থান, তিন লক্ষ্যকে মিলিয়ে আমাদের এই উদ্যোগ।’
প্রকল্পের মার্কেটিং কো-অর্ডিনেটর স্বাগতা রায় বলেন, ‘৭০৪৪৬৬৩৬৩১ এই হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে অর্ডার দেওয়া যাবে। অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমেও আমরা প্রচার করব। কলকাতার নির্দিষ্ট কিছু এলাকাতেই হোম ডেলিভারি পরিষেবা দেওয়া হবে। অন্তত একদিন আগে আমাদের অর্ডার দিতে হবে।’
ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত বাহারি খানার প্রতিটি মেনুতে বিশুদ্ধ বাঙালিয়ানাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই অষ্টমীতে সমস্ত পদই রাখা হচ্ছে নিরামিষ। খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে মাটির থালা, বাটি, গ্লাস। এখানেও একটি পৃথক মাত্রা আনার চেষ্টা করা হয়েছে। আর হ্যাঁ, খাবারের আয়োজনেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে না। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, দশমীতে বিশেষ উপহারও পাবেন খাদ্য রসিকরা। অর্থাৎ, পেটপুজোর সঙ্গেই চিত্তসুখ অনিবার্য। অপেক্ষা কেবল পঞ্চমী।