৯ হাজার কোটির শেয়ার বিক্রির পথে ইপিএফও
কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) গত অর্থবর্ষের সুদ মেটানো হবে দুই কিস্তিতে। সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মোদি সরকার। আগামী ডিসেম্বর মাসে সেই দ্বিতীয় কিস্তি দেওয়ার কথা। তা নিয়েই জেরবার কেন্দ্র। শ্রমমন্ত্রক সূত্রে খবর, এই সমস্যার সমাধানে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের (ইটিএফ) প্রায় ন’হাজার কোটি টাকার ‘শেয়ার’ বিক্রির পথে হাঁটতে পারে কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংগঠন (ইপিএফও)। ওই ফান্ডে ইপিএফওর লগ্নির অংশ বিক্রি করে লভ্যাংশের টাকায় দ্বিতীয় কিস্তির সুদ মেটানোর ভাবনা রয়েছে কেন্দ্রের। তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, শেয়ার বাজারের উত্থান-পতনের উপর এই লভ্যাংশের পরিমাণ নির্ভর করবে। আদৌ গত অর্থবর্ষের পুরো ৮.৫০ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যাবে তো? প্রশ্ন জেগেছে ইপিএফ গ্রাহকদের মনেও।
গত মার্চ মাসেই এই ৮.৫০ শতাংশ সুদের হার নিয়ে ইপিএফওর অছি পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। যা তার আগের অর্থবর্ষের তুলনায় অনেকটাই কম। যদিও কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারেনি। তবে গত সেপ্টেম্বর মাসে ফের ইপিএফও ট্রাস্টি বোর্ডের বৈঠকে সরকার জানিয়ে দেয়, করোনা পরিস্থিতি কারণে ৮.৫০ শতাংশ হারের সুদ দুই কিস্তিতে মেটানো হবে। প্রথম পর্যায়ে ৮.১৫ এবং পরে ডিসেম্বর মাসে বাকি ০.৩৫ শতাংশ সুদ পাবেন গ্রাহকরা। এই দ্বিতীয় কিস্তি নিয়েই যাবতীয় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে ইটিএফে প্রায় ন’হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছিল ইপিএফও। শেয়ার বাজারের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সেই লগ্নিরই অংশবিশেষ বিক্রি করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, লগ্নির অংশবিশেষ বিক্রি করে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা লাভ হতে পারে। যা ইপিএফের প্রায় সাড়ে ছ’কোটি গ্রাহকের দ্বিতীয় কিস্তির সুদ মেটানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। বেশ কয়েক কোটি টাকা উদ্বৃত্তও থাকতে পারে। অন্তত এমনটাই দাবি ইপিএফও সূত্রের।
এ ব্যাপারে ইপিএফও অছি পরিষদের সদস্য দিলীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘দেশের শ্রমিক-কর্মচারীদের কষ্টার্জিত সঞ্চয় কার্যত শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে, তাঁদের ভবিষ্যৎ এমনিতেই ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে কেন্দ্র। এবার যদি শেয়ার বিক্রির সময় বাজারের অবস্থা ভালো না থাকে, তাহলে আদতে ক্ষতির সম্মুখীন হবে সেই সাধারণ মানুষ। ইটিএফে বিনিয়োগের পরিমাণ কত, তার কোনও তথ্য দেয়নি সরকার।’