জামিন বলবিন্দর, পরিবার-শিখ সম্প্রদায়ের মন জিতলেন মমতা
নবান্ন অভিযানের দিন অস্ত্র মামলায় ধৃত বলবিন্দর সিংয়ের সম্প্রদায়কে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতে চেয়েছিল বিজেপি। তবে সেই প্রয়াসকে কখনই বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি তৃণমূল শিবির। শুরু থেকেই তাঁরা বলে আসছিলেন, বাংলায় এই ‘সাম্প্রদায়িক’ রাজনীতি করে কোনও লাভ হবে না। যদিও রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে হাতিয়ার করা হয়েছিল বলবিন্দরের স্ত্রীকেও। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সরাসরি নবান্নের সামনে অনশনে বসার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। যদিও তার আগেই সুর নরম হতে শুরু করেছিল। আর অবশেষে সোমবার নবান্ন অভিযানের দিন অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার হওয়া বলবিন্দরের জামিন হয়ে গেল।
আড়াই হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁকে মুক্তি দিয়েছে হাওড়া আদালত। যদিও বলবিন্দরের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স টুইট করায় হাওড়া সিটি পুলিশের সমালোচনাও করেন বিচারক। যদিও নবান্নের সামনে ছেলের হাত ধরে অনশনে বসার আগেই বলবিন্দর সিংয়ের স্ত্রী করমজিৎ কউরকে জানানো হয়েছিল, তাঁর স্বামীকে মুক্তি দিয়ে দেবে রাজ্য পুলিশ। দিল্লি শিখ গুরুদোয়ারা ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি ও অকালি দলের মুখপাত্র মনজিন্দর সিং সিরসাও এ নিয়ে টুইট করেছিলেন।
গত শুক্রবারই বলবিন্দরের বিষয়ে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ডিজি বীরেন্দ্র। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং তারপরই বলবিন্দর সিংয়ের পরিবারকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, বেআইনি অস্ত্র সঙ্গে রাখা–সহ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ খারিজ করা হবে। তাঁকে খুব শীঘ্রই মুক্তি দেওয়া হবে। অবশেষে তা হল সোমবার।
জানা গিয়েছে, আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলবিন্দর সিংয়ের স্ত্রী করমজিৎ কউরের জন্য একটি সালওয়ার সুটও পাঠিয়েছেন। বলবিন্দরের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রীর এই ভালবাসায় তাঁরা গভীরভাবে আপ্লুত।
যুব মোর্চার নবান্ন অভিযানের দিন হাওড়া থেকে পিস্তল-সহ গ্রেফতার হন বলবিন্দর। বিজেপির দাবি ছিল, তিনি যুব মোর্চার এক নেতার ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। এবং তাঁর পিস্তল রাখার লাইসেন্সও আছে। যদিও সেই পিস্তল শুধু কাশ্মীরের রাজৌরির জন্যে লাইসেন্স প্রাপ্ত। এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হতেই আসরে নেমে পড়েন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতারা। মূলত দিল্লির শিখ নেতারা বঙ্গ প্রশাসনের সামালোচনা করে টুইটারে ঝড় তোলেন। কিন্তু শেষমেশ বলবিন্দরের পরিবার তো বটেই, গোট শিখ সম্প্রদায়ের মনও জিতে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বলছে রাজনৈতিক মহল।