চিত্তরঞ্জন পার্কের অধিকাংশ জায়গাতেই ঘটপুজো, ব্যতিক্রম কালীবাড়ি
দিল্লির মিনি কলকাতা বাঙালি পাড়া চিত্তরঞ্জন পার্কে এবার দুর্গাপুজোয় অভিনব সচেতনতা। পুজো হবে একদিনই। এবং তা শেষ হয়ে যাবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। প্রতিবারের মতো প্যান্ডেল নেই, অধিকাংশ জায়গাতেই প্রতিমা নেই। পুজো হবে ঘটে। অঞ্জলি থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সবটাই ভার্চুয়াল। প্রথা মেনে শুধুমাত্র সিআর পার্ক কালীবাড়িতে পুজো হবে চারদিনই। যদিও সেখানে সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ। সরকারি নির্দেশিকা মেনে করোনা প্রতিরোধ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধিকে গুরুত্ব দিতেই এমন আয়োজন। বলছেন চিত্তরঞ্জন পার্কের পুজোর উদ্যোক্তারা।
অন্যান্যবার এইসময় পুজোর শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখতে কার্যত নাওয়া-খাওয়া ভুলে যান সিআর পার্কের দুর্গাপুজোর আয়োজকেরা। নিউ নর্মাল পরিস্থিতিতে আচমকা বদলে গিয়েছে রাজধানীর বাঙালি পাড়ার পুজোর প্রেক্ষাপটটাই। ব্যস্ততা নেই, হাঁকডাক নেই, কাজের ফাঁকে তৈরি হতে থাকা মণ্ডপে দাঁড়িয়ে সকলে মিলে খাওয়াদাওয়াও নেই। এমনকী বারবার প্রতিমা তৈরির কারিগরকে তাগাদা দেওয়াও বন্ধ।
সিআর পার্ক কালীবাড়িতে অবশ্য পাঁচ ফিটের প্রতিমায় পুজো হবে। আর এখানকার বারোয়ারি পুজোগুলির মধ্যে একমাত্র পকেট কে-ওয়ান এবং পকেট চল্লিশের সম্মিলিত নবপল্লির পুজোয় তিন ফিটের প্রতিমার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাকি সিআর পার্ক বি ব্লক, মেলা গ্রাউন্ড কিংবা কো-অপারেটিভ গ্রাউন্ডের পুজো ঘটে করবেন উদ্যোক্তারা। পুরোহিত এবং তাঁর সহকারী মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১৫ জন মানুষ থাকবেন পুজোর আয়োজনে।
নবপল্লি, বি ব্লক এবং কো-অপারেটিভ গ্রাউন্ডের পুজো হবে আগামী ২৪ অক্টোবর। মেলা গ্রাউন্ড ঘটপুজো করবে আগামী ২৩ অক্টোবর। পুজোর পরেই ঘট বিসর্জন দেওয়া হবে। অর্থাৎ, একমাত্র কালীবাড়ি ছাড়া সিআর পার্কের আর কোনও পুজোতেই এবার দশমী বলে কার্যত কিছু নেই। তবে, নবপল্লি পুজো কমিটির সভাপতি সুব্রত কুণ্ডু বলেন, ‘তিন ফিটের হলেও যেহেতু প্রতিমায় পুজো হবে, তাই বিসর্জনের বন্দোবস্ত রাখতে হয়েছে। নবপল্লির যে নিজস্ব পার্ক রয়েছে, সেখানেই একটি জলভর্তি ড্রামে বিসর্জন দেওয়া হবে।’ হচ্ছে না ‘আনন্দমেলা’ও। বি ব্লক পুজো কমিটির যুগ্ম-সম্পাদিকা গোপা বসু বলেন, ‘এবার সকলের সুস্থতাই কাম্য। যাতে আগামী বছর দ্বিগুণ আনন্দ করা যায়।’ মেলা গ্রাউন্ডের উদ্যোক্তারা পুজো শেষে শান্তিজলও ছেটাবেন না। জানালেন কমিটির সম্পাদক নারায়ণ দে। কো-অপারেটিভ গ্রাউন্ড পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা সৌরভ চক্রবর্তী বললেন, ‘সিআর পার্কের কোনও বারোয়ারি পুজোয় এবার ভোগপ্রসাদের আয়োজন নেই।’ তবে অনলাইনে ভোগপ্রসাদের আবেদন করলে একমাত্র সিআর পার্ক কালীবাড়ি কোভিড প্রোটোকল মেনে বাড়িতে তা পৌঁছে দিয়ে আসবে। দিল্লির সফদরজংয়ের পুজোমণ্ডপে করোনাসুর বধের ছবি।