মানবিক মমতা, নবনীড় বৃদ্ধাশ্রমে আবাসিকদের জন্য করলেন পুষ্পাঞ্জলির ব্যবস্থা
করোনাকালের পুজোয় বৃদ্ধাশ্রমেই দেবী দুর্গার মূর্তিতে আবাসিকদের পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আশ্রমে হাজির হয়ে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে প্রবীণ-প্রবীণাদের উদ্দেশ্যে তৃতীয়ার বিকেলে মমতার আবেদন, “ভিড় এড়িয়ে সুরক্ষা মেনে মাস্ক পরে উৎসবে অংশ নিন। নিজেরা ভাল থাকুন, অপরকেও ভাল রাখুন।” রাতে বাড়ি ফিরে নিজের ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রী মা দুর্গার আগমনে বাংলার সকলের ঘরে মঙ্গলালোক জ্বলে ওঠার আবেদন জানান। আশ্রমের আবাসিকদের নিয়ে তিনি লিখেছেন, “দুর্গতিনাশিনী মায়ের আর্শিবাদে তাঁরা সকলে সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন।”
অতিমারী সত্ত্বেও প্রতিবছরের মত এবারও সোমবার চেতলার নবনীড় বৃদ্ধাশ্রমে এসেছিলেন মানবিক মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও ইন্দ্রনীল সেন। তবে এবার তিনি অন্যবছরের মত ঘরোয় আড্ডায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সঙ্গে মিশে যাননি। প্রবীণরা সবাই ছিলেন নিজের ঘরে, চারদিকে সাউন্ড সিস্টেম লাগানো ছিল। আর মুখ্যমন্ত্রী বসেছিলেন বাইরের প্রশস্ত টেরাকোটা টাইলসে মোড়া চাতালে কাঠের চেয়ারে। আর বসেই শিল্পী-মন্ত্রী ইন্দ্রনীলকে পুজোর গান ধরতে বলেন। প্রথমে ‘এল পুজো এল’ ও পরে ‘এ মাটি এমন মাটি’ দু’টি গান করেন শিল্পী। দু’টি গানই মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ও সুর দেওয়া।
শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“জীবন থাকলে রোগ-ভোগ থাকবে। চিন্তা করার কিছু নেই। আমরা আছি আপনাদের জন্য। এখানকার সবাই আমার পরিচিত, ব্যক্তিগতভাবে অধিকাংশকেই তো চিনি।” পুজো উপলক্ষ্যে সকলকে উপহার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি উৎসবের দিনগুলি যাতে আনন্দে ভরে ওঠে তার সুব্যবস্থাও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যবছর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অষ্টমীর দিন দু’টি বাসে করে নবনীড়ের আবাসিকদের শহরের বিখ্যাত পুজো দেখতে নিয়ে বেরোন স্বয়ং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু এবছর করোনা সংক্রমণের জেরে আশ্রম চত্বরেই একটি ডোকরার দুর্গামূর্তি বসিয়ে দেওয়ার জন্য পুরমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আশ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তাঁর আবেদন, “এবছরটা ঘরে বসে টিভিতে ঠাকুর দেখুন, সুরক্ষিত থাকুন, সুস্থ থাকুন, আর ডোকরার মাতৃমূর্তিতে অঞ্জলি দিন।”