শুভ মহাষ্টমী
চারদিনের পুজোর মধ্যে মহাষ্টমীর পুজোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ঘরে ঘরে, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে পুষ্পাঞ্জলি দিয়েই শুরু হয় সকাল।
ছেলে মেয়েরা শাড়ি-পাঞ্জাবী পরে ঘুরে বেড়ায়, আর যুবক যুবতীর সারাটা দিনই কেটে যায় নতুন মনের মানুষটির মনে আরেকটু জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টায়। তাদের মন অঞ্জলির মন্ত্রর থেকেও বেশি পছন্দের মানুষ্টির দিকেই থাকে।
ভোগ খাওয়া আর সাথে দেদার আড্ডা
অঞ্জলি দেওয়ার পর হাল্কা কিছু খেয়ে অপেক্ষা অষ্টমীর ভোগের। সেই রোমাঞ্চ তুলনাহীন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চিরাচরিত ভোগ খিচুড়ি, বেগুন ভাজা, লাবড়া, ধোকার ডালনা, পায়েস, চাটনি এবং মিষ্টি। বনেদি বাড়ি থেকে বারোয়ারি পুজো নিয়ম কানুনে তফাৎ থাকলেও আনন্দ সব জায়গাতেই সমান।
অষ্টমী সন্ধ্যে মানেই আড্ডা, প্যান্ডের ঘোরা, মহাষ্টমীর সাবেকী সাজ। পাড়ার পুজো, গিটার, হেমন্তের গান, বন্ধুদের আড্ডা, আর কি চাই!
অষ্টমীর পুজোর রীতি
এই দিনে বিভিন্ন জায়গায় কুমারী পুজো করা হয়। বেলুরমঠ তাদের মধ্যে অন্যতম। বেলুরমঠের কুমারী পুজোর কথা সবাই শুনেছেন। অত্যন্ত জনপ্রিয়। ১৯০২ সালে স্বামী বিবেকানন্দ প্রথম এই পুজোর প্রচলন করেন। তারপর থেকে প্রতি বছর হয়ে আসছে এই অনুষ্ঠান। প্রতিবছর এই অনুষ্ঠান দেখতে হাজার হাজার ভক্ত বেলুরমঠে ভীড় করে থাকেন। কুমারীকে সোনা রূপোর গয়না, বস্ত্র উৎস্বর্গ করা হয়।
এরপর বিশ্বের অশুভ শক্তি নাশের জন্যে করা হয় সন্ধি পুজো। অষ্টমী এবং নবমীর সন্ধিকালে করা হয় এই গুরুত্বপূর্ণ বিধি। অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট থেকে শুরু করে নবমীর প্রথম ২৪ মিনিট পর্যন্ত করা হয় এই পুজো। সন্ধ্যে বেলাতেও হতে পারে আবার ভোর বেলাতেও হতে পারে এই পুজো। এইসময় দেবী দুর্গাকে দেবী চামুণ্ডা রূপে পুজো করা হয়। দেবী চামুণ্ডাই মহিষাসুর বধ করেন। এই পুজোর প্রধান সামগ্রী ১০৮ টি পদ্ম এবং ১০৮ টি প্রদীপ।
আনন্দে বাজিমাত
মহাঅষ্টমী মানেই সীমাহীন আনন্দ। বাড়িতে ফেরার তাড়া নেই, দেরী হলে কেউ বকাবকি করবে না। বড়দের অফিসের তাড়া নেই, মহিলাদের বাড়ির কাজের তাড়া নেই। এমন দিন আর কটাই বা আসে বাঙালির জীবনে!