উৎসব পালন হোক দায়িত্ববান হয়ে, বার্তা ইউনিসেফের
করোনার বিপদ এখনও কাটেনি। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় উৎসব বন্ধ নেই। পশ্চিমবঙ্গেও পালিত হচ্ছে দুর্গাপুজো। এই সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ধর্মীয় উপাসনা, অনুষ্ঠান, উৎসব পালনে আরও বেশি দায়িত্ববান হওয়ার উপরে জোর দিল ইউনিসেফ (UNICEF)। করোনাকে ঠেকাতে উদ্যোক্তা এবং সাধারণ মানুষকে বিশেষ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, করোনার বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে এখন এক জায়গায় জমায়েত না করাই ভালো। একান্তই সমাবেত হতে হলেও আগে থেকে পরিকল্পনা করতে হবে। মানতে হবে কয়েকটি কঠোর নিয়ম— উপাসনাস্থলে প্রবেশ এবং প্রস্থান নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অন্তত এক মিটার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। চার দেওয়ালের অন্দরে নয়, খোলামেলা জায়গায় সমাবেত হওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। নিয়মিত উপাসনাস্থল জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
করোনা রোগী বা উপসর্গ থাকা ব্যক্তি ও তাঁর সংস্পর্শে আসা প্রত্যেকের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা উচিত নয়। সংক্রমণের আশঙ্কা থাকলে রীতিনীতি যতটা সম্ভব অপরিবর্তিত রেখে আচারে অনুষ্ঠানে পরিবর্তন আনতে হবে। শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা নয়, নিয়মিত ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-জলে হাত ধোয়ার ব্যাপারে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করাও জরুরি। ব্যক্তিজীবনেও বেশ কিছু বদল আনার পক্ষেও সওয়াল করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের অধীনস্থ এই সংস্থা। তাদের পরমার্শ, প্রত্যেকের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। যতটা সম্ভব ছোঁয়াচ এড়িয়ে চলা দরকার। করমর্দন বা আলিঙ্গন নৈব নৈব চ। স্থানীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেই উৎসব পালনের কথা জানিয়েছে ইউনিসেফ। ভিড় এড়াতে টিভি, রেডিও, সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচারেও জোর দেওয়া হয়েছে।
যে কোনও উৎসবে ধর্মীয় আচার পালনের পাশাপাশি অন্যান্য সামাজিক দায়িত্বও রয়ে যায়। করোনা কালে সেই দায়িত্ব আরও বড়। কোভিডে বিপদের ঝুঁকি থাকা মানুষের পাশেও দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে ইউনিসেফ। সংস্থার কথায়, বয়স্ক মানুষ, অতি দরিদ্র, শিশু, সন্তানসম্ভবা, বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি, গৃহহীন মানুষ, জটিল রোগ থাকা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে হবে। এদের মধ্যেই করোনার ঝুঁকি বেশি। বিভিন্ন ধর্মের সেবকরা যতটা সম্ভব এই মানুষগুলির পাশে থাকার চেষ্টা করুন। অন্যদিকে, উৎসবের মধ্যেও করোনা সম্পর্কিত বিভিন্ন ভুল তথ্য, গুজব জনমানসে আতঙ্ক ছড়ায়। মানুষের মধ্যে সঠিক রোগ সচেতনতা গড়ে ওঠে না। এক্ষেত্রেও ধর্মীয় গুরু এবং ধর্ম পালনকারীদের সঠিক তথ্যের মাধ্যমে মানুষের ভুল ভেঙে দিতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছে ইউনিসেফ।