চিত্র পরিচালক রবীন্দ্রনাথ? জেনে নিন কবির অজানা সত্ত্বার কথা
ভারতীয় সিনেমায় ১৯৩১ সাল খুব উল্লেখযোগ্য। বম্বেতে প্রথম ভারতীয় সবাক চলচ্চিত্র আলম আরা মুক্তি পায়। দর্শক সামলাতে পুলিশ নামে। ১৯৩৪ সালে ভারতীয় সিনেমাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হিমাংশু রাই বম্বে টকিজ শুরু করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই নতুন মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হন। তিনি একটি চিঠিতে লেখেন, সিনেমার মূল আকর্ষণ হল এর গতি। এই গতিময় মুখের মাধ্যমে অনেক কথা না বলেও বোঝানো সম্ভব, এখনকার সঙ্গীত কোনও মানে ছাড়াই খ্যাতি লাভ করতে পারে এই মাধ্যমে। কেন এই মাধ্যমকে একপোজ করা হবে না?
তপতী সিনেমায় মূল ভুমিকায় ছিলেন রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং। এটির শুটিং হয় শান্তিনিকেতনে এবং পরে ১৯২৯ সালে চলচিত্রের আকার দেয় ব্রিটিশ ডমিনিয়ন ফিল্মস লিমিটেড। এর বেশি গল্পই তাঁর জীবন নিয়ে। নটীর পুজো ছবিতে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন পরিচালক। উপমহাদেশে এই সিনেমার অপরিসীম গুরুত্ব।
নটীর পুজো পূজারিণী কবিতার নাট্যরূপ। এই সিনেমায় সকল অভিনেত্রী ছিলেন মহিলা। এই গল্প ২৫০০ বছর আগের এক বুদ্ধের উপাসকের যিনি উপাসনার জন্য নিজের জীবনের আহুতি দিয়েছিলেন। এই গল্প পালি ভাষায় লেখা অবদান শতক থেকে নেওয়া।
এই গল্প প্রথম মঞ্চস্থ হয় ১৯২৭ সালে জোড়াসাঁকোতে। এই সময় বিশ্বভারতী তৈরী করার জন্য তিনি অরথাভাবে ভুগছিলেন। এর পর কলকাতার নিউ এম্পায়ারে এটি মঞ্চস্থ হয় তাঁর ৭০ বছরের জন্মদিনে। চিত্র প্রযোজক ও নিউ থিয়েটারস ক্যালকাটার প্রতিষ্ঠাতা বীরেন্দ্রনাথ সরকার এটি দেখে রবীন্দ্রনাথকে প্রস্তাব দেয় এটিকে চলচ্চিত্র করার।
১৯৩১ সালে রবীন্দ্রনাথ এই সিনেমার পরিচালনা করেন। তিনি একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন। সিনেমাটি চারদিনে শুট হয়। এডিটের পর এই সিনেমার রিলের দৈর্ঘ্য হয় ১০৫৭৭ ফুট। ১৯৩২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এই সিনেমা প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং দেখতে গেছিলেন।