গুরুংয়ের প্রত্যাবর্তনের তোলপাড় পাহাড়, মমতার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন বিনয় তামাং
তিন বছর পর পাহাড়ের একদা প্রতাপশালী নেতা বিমল গুরুংয়ের (Bimal Gurung) আচমকা প্রত্যাবর্তন পুজোর মরশুমে তোলপাড় ফেলেছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর প্রাণখোলা সমর্থনের ঘোষণা জল্পনা আরও বাড়িয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে বর্তমান জিটিএ’র (GTA) দায়িত্বে থাকা বিনয় তামাং (Binay Tamang), অনীত থাপাদের আশু কর্তব্য কী, সে বিষয়ে আলোচনা করতে তাঁদের ডেকে পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৩ নভেম্বর জিটিএ-র বর্তমান প্রেসিডেন্ট বিনয় তামাং এর তাঁর সহকারী অনীত থাপা আসছেন কলকাতায়। শনিবার কার্শিয়াংয়ে গুরুং বিরোধী মিছিল থেকে এ কথা জানালেন অনীত থাপা।
২০১৭ সালের জুন মাসে দার্জিলিংয়ে রাজ্য সরকারের বিরোধিতায় তীব্র অশান্তি তৈরির পর ফেরার হয়ে গিয়েছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তৎকালীন প্রধান বিমল গুরুং। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে UAPA ধারায় মামলা দায়ের হয়। দীর্ঘ সময়ে অজ্ঞাতবাসে থাকার পর পঞ্চমীর বিকেলে আচমকাই কলকাতায় উদয় হন তিনি। সল্টলেকের গোর্খা ভবনে গিয়ে ঢুকতে না পেরে এক পাঁচতারা হোটেলে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অনড় থেকেও বিজেপির সঙ্গে জোট ছিন্ন করে শাসকদলের হাত ধরার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন গুরুং। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ফের মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চেয় একুশের লড়াইয়ে তৃণমূলের হয়ে জান লড়িয়ে দেওয়ার কথাও বলেন। রাতারাতি তৃণমূলও তাঁকে স্বাগত জানিয়ে টুইট করে বসে। মুখ কালো হয়ে যায় বর্তমানে জিটিএ’র দায়িত্বে থাকা বিনয় তামাংদের। তাঁরা গুরুংয়ের প্রত্যাবর্তন নিয়ে মুখে কার্যত কুলুপ এঁটেছিলেন।
কিন্তু যতটা সহজে পাহাড়ের জমি ফিরে পাওয়া যাবে বলে আশা ছিল গুরুংয়ের, বাস্তব তেমনটা নয়। পুজোর মাঝেই দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন জায়গায় গুরুং বিরোধী মিছিল শুরু হয়, ‘গো ব্ল্যাক’ স্লোগান ওঠে। গত সপ্তাহের পর শনিবারও কার্শিয়াংয়ে বিনয় তামাংয়ের নেতৃত্বে শান্তি মিছিলে যোগ দেন হাজার হাজার মোর্চা সমর্থক। পাহাড়ে অশান্তি তৈরি করা কাউকে আর চান না, এমনও মতামত শোনা যায় সমর্থকদের মুখে।
এসব হলেও গুরুংয়ের প্রত্যাবর্তন বিনয় তামাংদের কাছে কিছুটা তো প্রতিকূল পরিস্থিতি বটেই। এবার সেসব নিয়েই তাঁরা হাজির হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরবারে। জিটিএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট অনীত থাপা জানিয়েছেন, ”আগামী ৩ নভেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের ডেকে পাঠিয়েছেন বৈঠকের জন্য। আমরা কলকাতায় যাব।” অনুমান করে নিতে অসুবিধা হয় না যে এই মুহূর্তে বিনয়, অনীতদের ‘মাথাব্যথা’ গুরুংই আলোচনার মুখ্য বিষয়বস্তু হয়ে উঠবেন।