দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

ঝাড়গ্রামে সুকুমার হাঁসদার শবদাহে বাধা গ্রামবাসীদের

November 2, 2020 | 2 min read

বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সুকুমার হাঁসদার (Sukumar Hansda) দেহ সৎকার করা নিয়ে রীতিমত নাটক চলল শুক্রবার। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন সুকুমারবাবু। বহু দিন ধরে মারণ রোগ ক্যানসারে ভুগছিলেন। আজ তাঁর দেহ সৎকারের জন্য জারালাটা গ্রামে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তানিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে প্রশাসনের রীতিমত বচসা বেঁধে যায়। রীতিমত হুলুস্থুলকাণ্ড ঘটে যায় এদিন। গ্রামবাসীদের বোঝাতে কালঘাম ছুটে যায় উপস্থিত নেতাদের।

আসলে, সুকুমারবাবুর গ্রামের বাড়ি দুবরাজপুর। প্রথমে তাঁর দেহ সেখানেই সৎকার করা কথা ছিল। কিন্তু পরে ঠিক হয় জারালাটা গ্রামে সুকুমারবাবুর দেহ সৎকার করা হবে। সেখানে তাঁর পারিবারিক একটি জমি রয়েছে সেখানেই হবে সৎকার। সেইমত এদিন সুকুমারবাবুর মৃতদেহ জারালাটা গ্রামে পৌঁছয়। পারিবারিক সদস্য, প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে পৌঁছান দলীয় নেতারাও। সেখানে উপস্থিত হন, মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও মানস ভুঁইয়াসহ, এসপি অমিত কুমার ভরত রাঠোর, জেলা শাসক আয়েশা রানী, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি, ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু, চেয়ারম্যান বীরবাহা সোরেন।

খবর চাউর হতেই গ্রামবাসীদের এসে উপস্থিত হন দাহস্থলে। সেখানে তখন সুকুমারবাবুর সৎকারের তোড়জোর চলছিল। চিতাও প্রায় সাজিয়ে ফেলা হয়েছিল। তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানাতে গান স্যালুট দেওয়ার পর মুখাগ্নি দিতে গিয়ে বেঁধে যায় বচসা। চিতার কাঠ সরিয়ে দেয় গ্রামবাসীরা। চিতায় আগুন নেভানোর জন্য মহিলার জলের বালতি নিয়ে তেড়ে আসেন। স্থানীয়দের দাবি ছিল, ওই স্থানে দেহ সৎকার করলে সেখানে শ্মশান করতে হবে। এই নিয়ে ব্যাপক গোলমাল বেঁধে যায়। বচসার জেরে চিতার উপরেই বেশ কয়েক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে থাকে সুকুমার হাঁসদার দেহ। বেশ কয়েক ঘন্টা কেটে যাওয়ার পরে গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে রীতি মেনেই সুকুমার হাঁসদার মৃতদেহ সৎকার করা হয়। পরে পুলিশ সুপার ও জেলা শাসকের সঙ্গে আলোচনার পর একটি শ্মশান করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ দাহের কাজ শুরু হয়।

সুকুমার হাঁসদার বাড়ি ঝাড়গ্রাম (Jhargram) শহরের রঘুনাথপুর এলাকায়। তবে তার আদিবাড়ি ঝাড়গ্রাম শহরের অদূরে দুবরাজপুর গ্রামে। ২০১১ সালে তার প্রথম রাজনীতিতে আসা। সুকুমার বাবু ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের চিকৎসক ছিলেন। তাঁর বাবা প্রয়াত সুবোধ হাঁসদা সত্তর দশকে কংগ্রেস সরকারের কেন্দ্রীয় খনি,ইস্পাত ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ছিলেন।

বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে ঝাড়গ্রাম আসন (সাধারণ) থেকে জয়লাভ করেন। ২০১১ এবং ২০১৬ সালে পর পর দুবার ঝাড়গ্রাম বিধানসভা আসন থেকে জয়ী বিধায়ক ছিলেন।তৃণমূলের সরকারে প্রথম রাজ্যে ক্ষমতায় আসে ২০১১ সালে। সেই বছর তিনি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০১৬ সালে  দ্বিতীয় বার ঝাড়গ্রাম আসন থেকে জয় লাভ করলেও তাঁকে আর মন্ত্রী করা হয়নি। তবে ২০১৮ সালে বিধানসভায় ডেপুটি স্পিকারের (Deputy Speaker) পদ পান। এছাড়াও তিনি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ঝাড়গ্রাম জেলায় সুকুমার বাবুর আদিবাসী মানুষ জন সহ অন্যান্যদের উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের উন্নয়ন মূলক প্রকল্পগুলি পৌছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Sukumar Hansda, #JHARGRAM

আরো দেখুন