দেশ বিভাগে ফিরে যান

জানুয়ারিতেই টিকা, সিরামের ঘোষণায় আশার আলো

November 5, 2020 | 2 min read

একই দিনে দু’টি সুসংবাদ। মোদি সরকার একঝাঁক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে বুধবার জানিয়েছে, অবশেষে স্থায়ীভাবে অর্থনীতির ফিরছে সন্তোষজনক রাস্তায়। আবার এদিনই সন্ধ্যায় সিরাম ইনস্টিটিউটের (Serum Institute ) কর্তা আদার পুনাওয়ালা বলেছেন, জানুয়ারি মাসেই সাধারণ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন ( Vaccines) চলে আসার সম্ভাবনা প্রবল। এতদিন বলা হয়েছিল, ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে আপৎকালীন ব্যবহারের জন্যই আসতে পারে ভ্যাকসিন। কিন্তু বুধবার পুনাওয়ালা বলেছেন, ড্রাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাড়পত্র পেলে জানুয়ারিতে চলে আসবে ভ্যাকসিন। 

বাজারের হাল যে ফিরছে, তা অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তিগুলির ইতিবাচক গতিপ্রকৃতি থেকেই মোদি সরকার নিশ্চিত। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রক থেকে অর্থমন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের আওতায় থাকা অর্থনৈতিক মানদণ্ডগুলির সাম্প্রতিক পরিস্থিতির রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তথ্য-সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর ( Prakash Javadekar ) বলেছেন, একঝাঁক ফ্যাক্টরের উপর অর্থনীতির উন্নতি নির্ভর করে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেই ফ্যাক্টরগুলির বড়সড় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে লাগাতার এই অর্থনৈতিক মানদণ্ড বৃদ্ধির রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। অন্যতম হল বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি।

অক্টোবর মাসে দেশজুড়ে বিদ্যুতের চাহিদা ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর বর্ষণ বেশি হওয়ায় ফসলের জন্য অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যয় হয়নি। লকডাউনের পর থেকে রেলের স্বাভাবিক পরিষেবাও নেই। তা সত্ত্বেও বিদ্যুতের দাবি ১২ শতাংশ বেড়েছে। এটাই প্রমাণ করে, বিদ্যুৎ শিল্প ও উৎপাদন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে যে জিএসটি আদায় হয়েছিল, এবার অক্টোবর মাসে জিএসটি সংগ্রহ সেই পরিমাণকে ছাপিয়ে গিয়েছে। পণ্য পরিষেবা কর খাতে ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকা এসেছে শুধু এক মাসে। 

জাভরেকর বলেছেন, প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সদর্থক উপকরণ, যন্ত্রাংশ, ইনপুট ইত্যাদির সাপ্লাই, ক্রয়বিক্রয় ও চাহিদা বেড়েছে। স্টিল ও সিমেন্টে রপ্তানি, সাপ্লা‌ই ও চাহিদা বেড়েছে। ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে আশাতীত উন্নতি হয়েছে। রেলের পণ্য পরিবহণে একপ্রকার রেকর্ড হয়েছে। পাশাপাশি করোনা ও লকডাউনের জেরে এপ্রিল থেকে জুন মাসের প্রথম ত্রৈমাসিকে শিল্প-বাণিজ্য কোম্পানিগুলির মুনাফার যা হার ছিল, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত প্রায় প্রতিটি প্রথম সারির সংস্থার মুনাফা অনেক বেড়েছে। এর পাশাপাশি আবার নিয়োগও শুরু করেছে সংস্থাগুলি। সব মিলিয়ে মোদি সরকারের দাবি, অর্থনীতি আবার ফিরছে স্বাভাবিকতায়। 

এদিকে, বুধবার একদিকে যখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে অর্থনীতির স্বাভাবিকতা নিয়ে আশা প্রকাশ করা হয়েছে, তখনই এসেছে সিরাম ইনস্টিটিউটের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার আদার পুণাওয়ালার (Adar Poonawalla) ঘোষণা। তিনি বলেছেন, এখনও পর্যন্ত ব্রিটেন ও ভারতে এই প্রতিষেধক টিকা যাঁদের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তাই ড্রাগ রেগুলেটর সংস্থার ছাড়পত্র পেলে জানুয়ারিতেই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। এর আগে জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাইকর্মীদের জন্য ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র ডিসেম্বরের জন্যও চাওয়া হবে জানিয়েছে সিরাম। বুধবার পুনাওয়ালার কথায় আশার সঞ্চার হয়েছে, জানুয়ারি মাসে সাধারণ মানুষের জন্যও ভ্যাকসিন আনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ভ্যাকসিন এই আর্থিক বছরের মধ্যে আসার অর্থ হল, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও বিপুল ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেক্ষেত্রে ২০২০-২১ সালের জিডিপি(GDP) বৃদ্ধিহারেও ইতিবাচক ছাপ পড়বে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#corona vaccine, #serum institute of india

আরো দেখুন