← দেশ বিভাগে ফিরে যান
নোটবন্দির সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগেই জানত বিজেপি?
চার বছর আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, দুর্নীতিপরায়নদের অন্ধকারে রাখতেই নোটবন্দির সিদ্ধান্তকে গোপন রাখা হয়েছিল। বিরোধী দলগুলিকে বিদ্রুপ করে বলেছিলেন যে, ওরা এই জন্যই অভিযোগ করছে কারণ, ‘প্রস্তুতি’ নেওয়ার সময় ওরা পায়নি। কিন্তু এটা কখনো ভেবে দেখেছেন কি, মোদী নিজেই কি তার দল এবং বন্ধুদের এ সম্পর্কে আগেই অবহিত করেছিলেন কি না বা নোটবন্দির পরিপ্রেক্ষিতে ‘প্রস্তুতি’ নেওয়ার যথেষ্ট সময় দিয়েছিলেন কি না যাতে তারা নিজেদের কালো টাকার নিষ্পত্তি করতে পারেন!
একবার দেখে নেওয়া যাক সেই সম্ভবনার তালিকাঃ
- ২০১৬-র ৮ই নভেম্বরের ঠিক আগে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ সারা ভারতের বিজেপি নেতৃত্ববৃন্দকে জমি কেনার নির্দেশ দেন। বিজেপির জাতীয় কার্যালয় তাদের নামে বিহার এবং উড়িষ্যায় লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের জমি কেনে। বিজেপির বিহারের নেতা সুশীল মোদী স্বীকার করেছেন যে, বিজেপি সম্ভবত দেশের ৩০০টি জেলায় জমি কিনেছে। এই টাকা বিজেপি কোথা থেকে পেল? নোটবন্দি সম্পর্কে তারা কি আগেই খবর পেয়েছিল?
- মোদী এবং অমিত শাহ বিজেপি সাংসদ এবং বিধায়কদের ২০১৬-র ৮ই নভেম্বর থেকে তাদের টাকার হিসাব-নিকাশ জমা করতে বলেছেন। কিন্তু ২০১৬-র ৮ই নভেম্বরের ঠিক আগে বিজেপির নিজের সরকারি হিসেব-নিকেশ এবং তার নেতাদের হিসেব-নিকেশ কোথায় গেল?
- বিজেপি উত্তরপ্রদেশে কর্মীদের জন্য বিধানসভা ক্ষেত্র পিছু ৪টি করে মোটরবাইকও কিনেছে। ভারতে যখন নগদ টাকার অভাব চলছে, এই বিপুল টাকা বিজেপি জোগাড় করল কিভাবে? বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যেই দাবি করছেন যে, উত্তরপ্রদেশে প্রচুর নগদ টাকার আমদানি হবে যাতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনগণের ক্রোধের প্রশমন ঘটে।
- সংবাদ সংস্থা আইএএনএস ১৭ ডিসেম্বর এক সরকারী সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এক বিশেষ বিমানে ৫০০০ কোটি টাকা উত্তরপ্রদেশে পাঠিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যেই ঐ দাবিকে স্বীকার করেছেন। একথা যদি সত্যি হয় তবে এটা আর একটা বিপুল কেলেঙ্কারি ছাড়া অন্য কিছু না। কেননা, আরবিআই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে কাজ করতে পারে না। সারা দেশ যখন দুর্দশার মধ্যে রয়েছে তখন বেছে বেছে নির্বাচন হতে চলা রাজ্যগুলোতে টাকা পাঠিয়ে কৃত্রিম ও সাময়িক সুরাহা করার অধিকার তাদের নেই।
এসব সত্যিই কি কখনো ভেবে দেখেছিলেন! ‘ভাবুন ভাবুন ভাবা প্র্যাকটিস করুন’।