নোটবন্দির চার বছর পর কতটা সুফল পাওয়া গেল?
২০১৬ সালের ৮ই নভেম্বর হঠাৎ করেই সমস্ত ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়, যা ছিল বাজারে চলতি মুদ্রার ৮৬ শতাংশ। কারণ হিসেবে দেখানো হয় কালো টাকা এবং সন্ত্রাসবাদের নাশ। সেরকম কিছু তো হলোই না বরং ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল ভারতীয় অর্থনীতি। ক্ষতিগ্রস্ত হলেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষরা।
এ বিষয়ে দেশবাসীর কি মত তা জানতে ২২০টি জেলার ৩০,০০০ ভারতীয়কে নিয়ে একটি জরীপ করা হয়। তাতে দেশবাসীর যে উত্তর সামনে আসে তা হলঃ
- অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলেন ৩৩%
- অসংগঠিত ক্ষেত্রে আয় হ্রাস পেয়েছে বলে মনে করেন ৩২%
- কোন খারাপ প্রভাব নেই মনে করেন ২৮%
- জানিনা বলেন ৫%
- পরিযায়ী শ্রমিক এবং গ্রামের শ্রমিকদের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করেন ২%
ব্যাঙ্গালোরের আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক তাঁর গবেষনায় বলেন ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ৫০ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রের শ্রমজীবিদের এই নোটবন্দির ফল ভুগতে হয়েছে। গৃহ সহায়ক, রান্নার লোক, ড্রাইভার যাদের সাধারণত ক্যাশে বেতন দেওয়া হত তারাও দীর্ঘদিন বেতন পাননি।
বেশিরভাগ ভারতীয়ই মনে করেন নোটবন্দির কোন সুফলই পাওয়া যায়নি। সাধারণ মানুষ এও উল্লেখ করেন যে নোটবন্দির অন্যতম লক্ষ ছিল ক্যাশের ব্যবহার কমিয়ে মানুষকে ডিজিটাল পেমেন্টে উৎসাহী করা, কিন্তু সেরকম কিছু হতেও খুব একটা দেখা যায়নি। ডিজিটাল পেমেন্টের চল শুরু হলেও এখনো বেশিরভাগ ভারতীয় মুদি বাজার, গৃহ সহায়কের বেতন ক্যাশেই দেন।
শুধু তাই নয়, সম্পত্তি কেনার মতো বড় বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ১০ জনে ৬ জন ভারতীয়ই মোট টাকার ২৫%- ৫০% ক্যাশেই দেন।
এমতাবস্থায় সরকার কিভাবে কালো টাকা বাজেয়াপ্ত করবে? জরীপে অনেক ভারতীয় এও মনে করেন যে বর্তমানের ২,০০০ টাকার নোটও বাজার থেকে তুলে নেওয়া উচিৎ।