অধীরের সাথে দেখা করলেন না ত্বহা সিদ্দিকি
ফুরফুরা শরিফে গিয়ে পীর জাদা ত্বহা সিদ্দিকির (Taha Siddiqui)সঙ্গে দেখা হল না অধীর চৌধুরী ও আবদুল মান্নানের। তাঁর আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে কথা হয়েছে কংগ্রেস নেতাদের। বৈঠক হয়েছে ইব্রাহিম সিদ্দিকির সঙ্গেও। একুশের ভোটের আগে কংগ্রেস নেতাদের ফুরফুরা সফর তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। অধীর চৌধুরীর কথায়,”ফুরফুরা শরিফ ধর্মনিরপেক্ষ মানুষের তীর্থস্থান। বাংলার রাজনীতি ধর্মনিরপেক্ষ।”
আসন্ন বিধানসভা ভোটে বাংলায় সংখ্যালঘু ভোটে কার দিকে যাবে? আগে ওই ভোটের সিংহভাগই ছিল সিপিএমের দখলে। পালাবদলের পর সংখ্যালঘুদের ভরসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। তবে মালদহ-মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু এলাকায় শক্তিশালী কংগ্রেস। কিন্তু আসাউদ্দিন ওয়াইসি বাংলায় প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণার পর ওই ভোটের সমীকরণ বদলে গিয়েছে। সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের তিন জেলা- উত্তর দিনাজপুর, মালদহ ও মুর্শিদাবাদে প্রার্থী দিতে পারে মিম। সেটাই এখন আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেসে। সংখ্যালঘু ভোটে মিম ভাগ বসাতে পারে বলে মনে করছে নেতৃত্ব। সংখ্যালঘুদের মেজাজ বুঝতেই মঙ্গলবার অধীরের ফুরফুরা শরিফ-সফর বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। তবে এ দিন পীর জাদা তহ্বা সিদ্দিকি ছিলেন না। তাঁর ভাই আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করেন অধীর চৌধুরী ও আবদুল মান্নান। পরে ইব্রাহিম সিদ্দিকির সঙ্গেও কথা হয়। আব্বাস সিদ্দিকি হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাঁর সঙ্গে বৈঠকে নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। তবে আগে থেকে জানা সত্ত্বেও তহ্বার না থাকায় উঠছে প্রশ্ন। তাহলে কি অধীরদের এড়ালেন তহ্বা সিদ্দিকি?
এ দিন অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) বলেন,”ফুরফুরা শরিফের সিদ্দিকি সাহেবরা বাংলার সর্বস্তরের মানুষের মঙ্গল কামনা করেন। ফুরফুরা শরিফে ঢোকার সময় দেখলাম তোরণে লেখা, সর্ব ধর্মের মানুষের জন্য। ফুরফুরা শরিফ বাংলার ধর্মনিরপেক্ষ মানুষের কাছে তীর্থস্থান। তীর্থস্থানের ব্যবস্থাপকদের আমরা একটাই কথা বলেছি, বাংলার রাজনীতি ধর্ম নিরপেক্ষ। কংগ্রেস ও বাম আগামী দিনে জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই করবে। বাংলার স্বার্থে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে মজবুত করা দরকার। আপনারা দোয়া করবেন। এই আবেদন রাখলাম।” সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখাই এখন চ্যালেঞ্জ কংগ্রেসের কাছে। বিশেষ করে মালদহ, মুর্শিদাবাদে মুসলিম ভোট ভাগ আটকাতেই হবে অধীর চৌধুরীদের।
অধীরের ফুরফুরা যাত্রাকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রবীর ঘোষাল বলেন,”ভোট আসলেই এদের ধর্মের কথা, মন্দির-মসজিদের কথা মনে পরে। কিন্তু ধর্ম দিয়ে ভোট হয় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখবেন ভোটাররা। এইসব ধর্মের নামাবলি গায়ে দিলেও লোকে চিনে ফেলেছে। এটাই পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য। ভবিষ্যতের বিধানসভা ভোটে এটাই দেখতে পাব।”
ফুরফুরা যাওয়ার সময় এ দিন ডানকুনিতে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে অধীর বার্তা দেন, নির্বাচন আসন্ন। ভোটে সাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বিজেপি ও তৃণমূলকে রুখবে বাম ও কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের স্বার্থে এই বাংলায় বিজেপির প্রবেশ বন্ধ করা দরকার। বাংলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে বাম-কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির উপরে।