নেতাজির রাজনৈতিক উত্তরাধিকার রক্ষা করতে হবে: সুগত বসু
২৩শে জানুয়ারি নেতাজির জন্মদিবসকে জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করুক কেন্দ্র, এই মর্মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয় নিয়েই টিম দৃষ্টিভঙ্গি যোগাযোগ করে নেতাজির পৌত্র ডঃ সুগত বসুর (Sugata Bose) সঙ্গে।
কী বললেন তিনি? শুনে নিন তাঁর এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারটি
প্রশ্নঃ- গতকালই তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি পাঠিয়েছেন, আপনি কীভাবে দেখছেন জিনিসটাকে? এর আগেও অনেকে বলেছেন, এবার আবার বলা হচ্ছে। ২৩শে জানুয়ারি নেতাজির জন্মদিবসকে জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করুক কেন্দ্র, এই কথাটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখে পাঠিয়েছেন, দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে, আপনার প্রতিক্রিয়া কী? কারণ এর আগেও নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য নিয়েও অনেকে অনেক কথা বলতে চেয়েছেন, বা এবারেও সেই প্রসঙ্গও আছে সেই চিঠিতে যদি কোনোভাবে কোনকিছু করা যায় এবং তাঁর সঙ্গে অবশ্যই জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা। সেটা নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
সুগত বসুঃ- আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সঠিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিটি লিখেছেন। আমাদের দেশে এখন যা অবস্থা, এই মুহূর্তে নেতাজির মতাদর্শ অনুসরণ করা আমাদের পক্ষে খুবই জরুরী। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু (Nataji Subhas Chandra Basu) আমাদের দেশের সমস্ত ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে এবং সমস্ত ভাষাভাষীর মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছিলেন। এখন চারটি রাজ্যে ছুটি ২৩শে জানুয়ারি। আমাদের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম এবং উড়িষ্যায়। কিন্তু, আমরা যদি আজাদ হিন্দ ফৌজ দেখি তাহলে আমরা লক্ষ্য করবো সেখানে পঞ্জাব থেকে অনেক সৈন্য যোগদান করেছিলেন, তামিলনাড়ু থেকে অনেকে যোগদান করেছিলেন, মহারাষ্ট্র থেকে অনেকে যোগদান করেছিলেন। এমন কোনও রাজ্য নেই আমাদের এই দেশে যেখানে নেতাজির অনুগামী ছিল না। তাই জন্য এটা জাতীয় স্তরে ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা উচিৎ। তবে আমি এই কোথাও বলবো, সেই ছুটির দিনে যেন নতুন প্রজন্ম নেতাজির বক্তৃতা শোনে। আমাদের সমস্ত রেকর্ড আছে নেতাজির বক্তৃতার। তারা যেন নেতাজির লেখা পড়ে এবং তাঁর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে যেন দেশসেবার কাজে যোগদান করে।
প্রশ্নঃ- আপনি বলতে চাইছেন যেন পুর বিষয়টা শুধু প্রতীকী না থেকে আত্মীকরণও ঘটে, তাই তো?
সুগত বসুঃ- আমি তাই বলছি কারণ, নেতাজির জীবন এবং কাজের ওপরে আমাদের পুরো ফোকাস রাখতে হবে। কারণ, তাঁর থেকেই আমাদের দেশের নতুন প্রজন্ম শিক্ষা নিতে পারে। ছুটির দিন শুধু একটা দিন কাজ করবো না, সেই কথা যেন না ভাবে। এটা এমন একটা ছুটির দিন হবে যেদিন আমরা দেশের কাজে ব্রতী হব এবং নেতাজির আদর্শ অনুসরণ করবো, সেই প্রতিজ্ঞা আমরা করবো।
এই চিঠিটি এই সময়ে লেখার দরকার ছিল কারণ, ৫ই নভেম্বর ২০১৯ নেতাজির রাজনৈতিক গুরু দেশবন্ধ চিত্তরঞ্জন দাশের সার্ধশতবর্ষ ছিল। কিন্তু, এখন যারা দিল্লির মসনদে আছে, তারা হয়তো জানেনও না যে দিল্লির সিআর পার্ক তাঁর নামে নামাঙ্কিত, তাঁর দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে কী অবদান ছিল। তাই আমরা বাংলা থেকে একটা জোরালো বার্তা দিতে চাই যে দেশবন্ধু এবং নেতাজির ঐক্যের এবং সাম্যের যে আদর্শ, তাঁদের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার আমাদের রক্ষা করতে হবে ঠিক যেমন রবীন্দ্রনাথ ও নজ্রুলের যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সেটি বজায় রেখে আমাদের বাংলা থেকে সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে দিতে হবে।