জনসংযোগের নয়া অ্যাপ, প্রচারে তৃণমূল
মাছ আর জলের সম্পর্কের মতোই সরল জনগণের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে তার প্রভাব পড়ে ভোটের বাক্সে। যে কারণে রাজনৈতিক দলের নেতারা কর্মীদের প্রতিদিনই মানুষের সঙ্গে আরও নিবিড় যোগাযোগ গড়ে তোলার বার্তা দিয়ে থাকেন। বলেন, বছরভর মানুষের পাশে থাকতে। শাসক-বিরোধী সবপক্ষই চেষ্টা করে মানুষের দোরগোড়ায় গিয়ে দলের কথা তুলে ধরতে। ভোটের আগে এই পরিধি আরও বাড়ে। এই প্রেক্ষাপটে বর্তমান সময়ের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে (Digital Plat Form) কাজে লাগিয়ে জনসংযোগে জোর দিয়েছে তৃণমূল। মাধ্যম হয়ে উঠেছে ‘দিদির দূত’ অ্যাপ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকা, তৃণমূল নেত্রীর রাজনৈতিক কাজকর্ম সম্পর্কে জানা, নিজের মতামত তুলে ধরা— সবটাই অ্যাপের মাধ্যমে নিয়ে আসছে তৃণমূল। ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের তত্ত্বাবধানেই হচ্ছে এই কাজ। এই অ্যাপ যাতে মানুষজন ডাউনলোড করেন, তার প্রচার ফেসবুক ও টুইটারের মাধ্যমে করছেন তৃণমূলের নেতারা। গুগল প্লে-স্টোরে গিয়ে ইনস্টল করতে হবে ‘দিদির দূত’ (Didir Doot)অ্যাপ। সংক্ষেপে এই অ্যাপটিকে বলা হচ্ছে ‘ডি২’। অ্যাপটি ইনস্টল হয়ে গেলে বেশ কয়েকটি তথ্য দিতে হবে আগ্রহকারীকে। অ্যাপে মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর রেজিস্ট্রেশনের জন্য পূরণ করতে হবে একটি তালিকা। তাতে আগ্রহকারীকে জানাতে হবে নাম, ফোন নম্বর, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর, জন্মতারিখ, লিঙ্গ, ইমেল, জেলার নাম, বিধানসভা কেন্দ্র, বুথের নাম। দিতে হবে একটি ছবিও। এই তথ্য পূরণ করলে তৃণমূলের তরফে মোবাইলে আসবে একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড। সেটি প্রদান করলে রেজিস্ট্রেশনের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে।
এই অ্যাপের বিষয়টিকে তৃণমূল তিনটি ভাগে ভাগ করেছে। দিদির কথা জানুন, দিদির সঙ্গে কাজ করুন, দিদির সঙ্গে যুক্ত থাকুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) রাজনৈতিক কাজকর্মের প্রচার, ছবি, ভিডিও পাওয়া যাবে এই অ্যাপে। এছাড়াও নেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ থাকছে। তৃণমূলের বক্তব্য, ‘দিদির দূত’ এমন একটি অ্যাপ, যার মাধ্যমে মানুষজন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকতে পারবেন এবং উন্নততর বাংলা গড়তে নেত্রীর বক্তব্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) যাঁর সক্রিয় অ্যাকাউন্ট আছে, তিনি ‘দিদির দূত’ অ্যাপে স্বেচ্ছাসেবক হতে পারবেন। নেত্রীর বার্তাকে পৌঁছে দেওয়াই মূল লক্ষ্য বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। সেক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে কিছু কাজ দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে ‘দিদির দূত’ অ্যাপকে জনপ্রিয় করে তোলা এবং মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছনোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এর আগে জনসংযোগের ক্ষেত্রে তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিল। ফোন করে বাংলার মানুষজন তাঁদের সমস্যা, অভাব-অভিযোগের কথা জানিয়েছেন। দিয়েছেন মতামত। অভিযোগ আসার পর ‘দিদিকে বলো’ (Didike Bolo) টিম সমস্যা সমাধানের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। একাধিক ক্ষেত্রে সুরাহাও পেয়েছেন মানুষ। এবার জনসংযোগের নয়া মাধ্যম ‘দিদির দূত’ অ্যাপ।