করোনা আবহে জগদ্ধাত্রী বিসর্জনে নেই শোভাযাত্রা ও আলোর রোশনাই
বিসর্জনের বেদনা তো মিশে থাকেই জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagadhatri Puja) প্রতিমা নিরঞ্জনে। কিন্তু হাজারে হাজারে মানুষের সহর্ষ অংশগ্রহণে, রঙিন আলোকমালার ঝলকানিতে সেই বিসর্জনের বিষণ্ণতাকে ছাপিয়ে যেন আবাহনের আনন্দই এতদিন ফিরে পেতে অভ্যস্ত ছিল চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর। সেই চিরপরিচিত দৃশ্য এবার উধাও হল এই দুই জায়গা থেকে। বিসর্জনের মনখারাপের সঙ্গে যেন জুড়ে এসে বসল শোভাযাত্রাহীন, আলোকমালাহীন প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য এক রাশ মন খারাপ। এমন বিসর্জন যে আগে দেখেনি জগদ্ধাত্রী পুজোয় মাতোয়ারা চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর! করোনা পরিস্থিতিতে নানা বিধিনিষেধ মেনে, পুলিস প্রশাসনের কড়া নজরদারির মধ্যেই মঙ্গলবার প্রথম দিনের প্রতিমা নিরঞ্জন সম্পন্ন হয় চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বরে। কোথাও কোনও শোভাযাত্রা হয়নি। প্রতিমা বহন করতে পারার মতো পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকজনই গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত গিয়েছেন। পুরো বিষয়টি সুসম্পন্ন করতে রাস্তায় পুলিসের পাশাপাশি সক্রিয় ছিলেন পুরসভার কর্মীরাও। জলপথে স্পিডবোট, আকাশপথে ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে নজরদারি চালিয়েছে পুলিস। আবার গঙ্গা দূষণ ঠেকাতে প্রতিমা জলে পড়া মাত্র তার কাঠামো তুলে ফেলা হয়েছে পাড়ে। ফুল, বেলপাতা ও পুজোর অন্যান্য উপাচার জলে না ফেলে পাড়ে নির্দিষ্ট জায়গায় জমা করা হয়েছে।
পুরসভা ও চন্দননগর পুলিস কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে মোট ৯টি ঘাটে বিসর্জন হয়েছে এবার। এর মধ্যে শিববাটিঘাট, রানিঘাট এবং শ্রীমানিঘাটে সবচেয়ে বেশি প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। দুই শহর মিলিয়ে মোট প্রশাসন স্বীকৃত পুজোর সংখ্যা ১৭১টি। তবে সব মিলিয়ে প্রায় ২০০টি পুজো হয়। এর মধ্যে ৯০টি পুজোর প্রতিমা মঙ্গলবারই নিরঞ্জন করা হয়। বেশ কয়েকটি পুজো এবার করোনা পরিস্থিতিতে প্রতিমা পুজো না করে ঘটে পুজো সেরেছে। বাকি প্রতিমাগুলি আজ-কালের মধ্যে বিসর্জন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে চন্দননগর পুলিস কমিশনারেটের কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, মঙ্গলবারের বিসর্জন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবেই কেটেছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এবং করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধের ক্ষেত্রেও কোথাও আপস করা হয়নি। চন্দননগর পুরসভার (Chandannagar Municipality) কমিশনার স্বপন কুণ্ডু বলেন, ঘাট পরিষ্কার রাখা থেকে শুরু করে ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনকারীদের কোনও সমস্যা যাতে না হয়, সবদিক খেয়াল রেখেছিল পুরসভা। এবার ঘাটগুলিতে মানুষের জন্য পুরসভা পানীয় জলের ব্যবস্থাও করে। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রিষড়ার জগদ্ধাত্রী প্রতিমা এবং চন্দননগরের কিছু মণ্ডপের প্রতিমা আজ, বুধবারও মণ্ডপেই থাকবে।