রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

‘ডাকলে আমিও দিল্লি যাব’, কৃষক আন্দোলনে পাশে থাকার বার্তা মমতার

November 26, 2020 | 2 min read

পঞ্জাবের কৃষকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে (Farmers’ protest) তিনি শরিক হতে চান। বৃহস্পতিবার নবান্নয় বসে সে ইচ্ছেই পোষণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দু-দিনের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান বৃহস্পতিবারই শুরু হয়েছে। পঞ্জাবের একাধিক কৃষক সংগঠন বুধবার দিল্লি অভিযানের কথা ঘোষণা করার পরেই রাজধানীতে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। দিল্লির পুলিশ কমিশনার জানিয়ে দেন, কোভিড বিধি উপেক্ষা করে রাজধানীতে জমায়েত করার চেষ্টা হলে, আইনি পদক্ষেপ করা হবে। এদিন ১৪৪ ধারা জারি করে প্রতিবাদী কৃষকদের রোখার চেষ্টা হলে হরিয়ানা-দিল্লি সীমানায় প্রবল উত্তেজনা তৈরি হয়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ বাধায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় হরিয়ানা-দিল্লি সীমানা। বাধা পেয়ে জাতীয় সড়কে ধরনায় বসে পড়েন কৃষকেরা।

এই প্রসঙ্গ টেনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, ‘নয়া কৃষি আইন কৃষকদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এই আইন কালোবাজারি-লুঠেরাদের সাহায্য করছে।’বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করার সময় ফের একবার এই আইন নিয়ে কেন্দ্রকে তুলোধোনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (Bengal CM)। কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর বার্তা, ‘ডাকলে আমিও দিল্লি যাব। আপনাদের পাশে দাঁড়াব। আন্দোলন করব।’

বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘বিজেপি শুধু এক নেতা, এক দল, একার রাজনীতি চায়। আর কিছু না। এই দেশটা আমাদের সবার। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ওঁরা কোথায় ছিল? দেশের সঙ্গে বেইমানি করেছে ওঁরা। আমি সম্পূর্ণ ভাবে কৃষকদের সঙ্গে আছি।’

সংসদের বাদল অধিবেশনে তিনটি কৃষি বিল (Agriculture Bill) পাশ করায় কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁদের দাবি, চাষিদের স্বার্থেই নয়া আইন (Centre’s farm laws) কার্যকর করা হয়েছে। নয়া আইন নিয়ে বিরোধীদের পাশাপাশি কৃষক সংগঠনগুলিও সোচ্চার হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, কৃষকদের অধিকার কেড়ে নিতেই নয়া কৃষি আইন।

মমত আগেও বলেছেন। এদিন আবারও বললেন, ‘নতুন কৃষি আইন চাষিদের সর্বনাশ করবে। চাষিদের মুখের গ্রাস কেড়ে নেবে এই আইন। আলু-পিঁয়াজ ছিনিয়ে নেবে। শুধুমাত্র কালোবাজারি, লুঠেরাদেরই সাহায্য করবে।’ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি মন্তব্য করেন, দেশের জনতাকে মেরে ফেলতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই চাষিদের ফসল বিক্রির অধিকার কেড়ে নিয়েছে।’ যে কারণে প্রতিবাদী কৃষকদের পাশে তিনি আছেন বলে বার্তা দেন।

এদিকে, কোভিডের অজুহাতে পঞ্জাবের আন্দোলনরত কৃষকদের উদ্দেশে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লিতে আসার চেষ্টা করবেন না। ফিরে যান। কোনও ভাবে রাজধানীতে জমায়েতের চেষ্টা হলে, কোভিড বিধি ভাঙায় কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে। কৃষকদের দিল্লি আসার পথ বন্ধ করতে সীমানা অঞ্চলগুলিতে কড়া নজরদারি রয়েছে। গাড়িগুলিতে চলছে জোরদার তল্লাশি। কৃষক নেতৃত্ব পালটা হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছে, যন্তরমন্তরে পৌঁছতে না দিলে কৃষকরা দিল্লি-হরিয়ানা হাইরোডে ধরনায় বসবে।

এদিন পঞ্জাব থেকে হরিয়ানা ঢোকার পথে কৃষকদের জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি অবশ্য। হরিয়ানার পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘কেন্দ্র সরকার কৃষকদের সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। এই আইন কৃষকদের মঙ্গলের জন্য আনা হয়নি।’

হরিয়ানা সরকারের ভূমিকার নিন্দা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। কেজরির বক্তব্য, কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে জলকামান, টিয়ার গ্যাস ব্যবহার একেবারেই অনুচিত কাজ হয়েছে। তাঁর কথায়, কৃষকদের ওপর এই ধরনের আক্রমণ ‘একেবারেই ভুল’। ট‍্যুইটারে হিন্দিতে তিনি লেখেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের এই তিনটি কৃষি বিলই কৃষক-বিরোধী। এগুলো প্রত‍্যাহার করার পরিবর্তে কৃষকদের শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের আন্দোলনের ওপর জলকামান ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি একেবারেই ভুল। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Farmer Protest, #Mamata Banerjee

আরো দেখুন