৫০ লক্ষ সংখ্যালঘু পড়ুয়াকে স্কলারশিপ দিয়ে রেকর্ড করতে চলেছে বাংলা
করোনা মহামারীর মধ্যেই প্রায় ৫০ লক্ষ সংখ্যালঘু পড়ুয়াকে স্কলারশিপ দিচ্ছে রাজ্য। আর এই সংখ্যার নিরিখে দেশের মধ্যে রেকর্ড গড়তে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার।
শুধু মুসলিম নয়, মেধার ভিত্তিতে বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি ও শিখ সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারাও স্কলারশিপ পাবেন। আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ১ আগস্ট। চলবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সরকারের এই উদ্যোগে সাড়াও মিলছে বেশ ভালোই। সংখ্যালঘু দপ্তরের সর্বশেষ রিপোর্ট বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লক্ষ পড়ুয়া আবেদন করেছেন। বাকি আর ২০ দিন। এর মধ্যে আবেদনকারীর সংখ্যা লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলবে বলে আশাবাদী দপ্তরের শীর্ষকর্তারা।
সংখ্যালঘু উন্নয়নে বরাদ্দকৃত অর্থ বহু রাজ্য খরচ করতে পারেনি বলে বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। তালিকার প্রথম সারিতে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। সে দিক থেকে এত সংখ্যক পড়ুয়াকে নবান্নের আর্থিক সহায়তা দেওয়া বেনজির বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট সকলেই। এমনকী হার মেনেছে কেন্দ্রের ন্যাশনাল স্কলারশিপ প্রকল্পও। কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) প্রায় আটটি মন্ত্রক মিলে পড়ুয়াদের আর্থিক সাহায্য দেয়। আবেদন করতে হয় ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টালের মাধ্যমে। এবার সেই সংখ্যাকেও ছাপিয়ে যাবে রাজ্যের স্কলারশিপ প্রাপক।
গত বছর প্রায় ৪২ লক্ষ সংখ্যালঘু পড়ুয়াকে স্কলারশিপ (Scholarship) প্রদান করেছিল রাজ্য। টাকার অঙ্কে প্রায় ৭০০ কোটি। চলতি বছর বাড়তি আবেদনের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী তথা সংখ্যালঘু উন্নয়নমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাড়তি অর্থের সংস্থান রাখা হয়েছে। অর্থদপ্তরের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, বাড়তি আবেদনের জন্য অতিরিক্ত ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অর্থাৎ, এবার সংখ্যালঘু বৃত্তি খাতে খরচ হতে পারে প্রায় ৭৩০ কোটি টাকা। আর এই পুরো টাকাটাই রাজ্যের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এর আগে অল্প সংখ্যক পড়ুয়াকে এই বৃত্তির টাকা দিত কেন্দ্র। কিন্তু তাতে বাংলার অধিকাংশ সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীরা বঞ্চিত হতেন। অর্থের অভাবে পরবর্তী শিক্ষার সুযোগ পেতেন না তাঁরা। বিষয়টি নজরে আসতেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য সরকার এককভাবে বৃত্তি প্রদানে উদ্যোগী হয়। জানা গিয়েছে, মোট পাঁচ ধরনের স্কলারশিপ দেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। যেমন, প্রি-মেট্রিক, পোস্ট-মেট্রিক, মেরিট কাম মিনস, স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস এবং ট্যালেন্ট সাপোর্ট স্টাইপেন্ড। প্রতিটি বৃত্তি প্রকল্পে বাৎসরিক ১১০০ টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়। দশম শ্রেণী থেকে এমফিল কিংবা একাধিক উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বৃত্তি পেতে পড়ুয়ারা আবেদন করেন। বিবেচিত হলে টাকা সরাসরি চলে যায় তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান পি বি সেলিম বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে একটিও সংখ্যালঘু ছেলেমেয়ে এই স্কলারশিপ থেকে যাতে বাদ না যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে অ্যাকাউন্টে আর্থিক সাহায্য পৌঁছে দেবে সরকার। আগে কেন্দ্রের কাছে ছেলেমেয়েরা আবেদন করত। মাত্র ৩০ শতাংশ পড়ুয়া বৃত্তি পেতেন।’