রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

কৃষকের কাছ থেকে বেশি সংখ্যক ধান কেনার সিদ্ধান্ত রাজ্যের

November 29, 2020 | 2 min read

রাজ্যে এবার ধানের বাম্পার ফলন হতে চলেছে। এর ফলে খোলাবাজার থেকে অনেকটা বেশি দামে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে চাষিদের আগ্রহ স্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার ঠিক করেছে, আপাতত একজন চাষির কাছ থেকে ৪৫ কুইন্টাল করে ধান কেনা হবে। এই পরিমাণ আগে ৯০ কুইন্টাল ছিল। আরও বেশি সংখ্যক ছোট ও প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে ধান (Paddy) কেনার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছোট ও প্রান্তিক চাষিদের উৎপাদিত ধানের পরিমাণ কম। ফলে সরকার চাষি পিছু কেনার পরিমাণ কমালে তাঁদের কোনও অসুবিধা হবে না। ধান কেনা নিয়ে শুক্রবার খাদ্যশ্রী ভবন থেকে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন।

গত খরিফ মরশুমে সরকারের কাছে প্রায় ২১ লক্ষ চাষি ধান বিক্রি করেছিলেন। গতবারে নথিভুক্ত চাষিদের এবার নতুন করে নথি পেশ করে নাম লেখানোর প্রয়োজন পড়ছে না। নভেম্বর মাস থেকে ধান কেনা শুরু করেছে সরকার। এর মধ্যে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে ইচ্ছুক নতুন প্রায় ১২ লক্ষ চাষি নাম নথিভুক্ত করেছেন বলে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallik) জানিয়েছেন। এই সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে খাদ্য দপ্তর মনে করছে। প্রতিদিন ৮০০-৯০০ চাষি নতুন করে নাম নথিভুক্ত করছেন।

এবার রাজ্যে ধান চাষের পক্ষে আবহাওয়া অনুকূল ছিল। কোনও বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় হয়নি। ফলে ধানের উৎপাদন বাড়বে। উৎপাদন বেশি হলে ধানের দাম পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তখন কম দামে অভাবী বিক্রি করতে বাধ্য হন চাষিরা। ছোট ও প্রান্তিক চাষিরা আর্থিক কারণে তাঁদের ধান তাড়াতাড়ি বিক্রি করতে চান। এবার করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক সঙ্কটের জন্য দ্রুত ধান বিক্রির আগ্রহ আরও বাড়তে পারে। মরশুমের শুরুতে সরকারের কাছে অনেকটা বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পারলে ছোট চাষিদের অনেকটাই সুবিধা হবে। এখনও নতুন ধান খুব বেশি পরিমাণে উঠতে শুরু করেনি। নতুন ধান বেশি পরিমাণে উঠবে ডিসেম্বর থেকে। কিন্তু এখনই খোলাবাজারে ধানের দাম সরকারের নির্ধারিত ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্যের থেকে কুইন্টালে প্রায় ৫০০-৬০০ টাকা কম আছে। সরকার চাষিদের কাছ থেকে এই মরশুমে কুইন্টাল প্রতি ১৮৬৮ টাকা দরে ধান কিনবে। স্থায়ী ক্রয়কেন্দ্রে আরও অতিরিক্ত ২০ টাকা পান চাষিরা।

কয়েক মাস পর রাজ্যে বিধানসভা ভোট (West Bengal Assembly Election)। এই সময়ে যতটা বেশি সম্ভব সাধারণ চাষির কাছ থেকে ধান কিনতে চাইছে সরকার। সেই মতো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। চলতি খরিফ মরশুমে ৫২ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা আছে সরকারের। খাদ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রয়োজনে নবান্নের বিশেষ অনুমোদন নিয়ে এর থেকে বেশি ধান কেনা হবে।

প্রকৃত চাষির কাছ থেকে যাতে ধান কেনা হয় সেদিকে বিশেষ নজরদারি থাকছে। ধান ব্যবসায়ী বা ফড়েদের সরকারের কাছে ধান বিক্রি করা এবার যে বরদাস্ত করা হবে না সেই বার্তা সংশ্লিষ্ঠ মহলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত চাষি ধান বিক্রি করেছেন কি না, তা জানার জন্য নথিভুক্ত মোবাইল নম্বরে সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ যাবে। সাধারণ চাষিরা যাতে সহজে বুঝতে পারেন তার জন্য এই মেসেজ বাংলায় পাঠানো হবে। এখানে জানতে চাওয়া হবে চাষি কি ধান বিক্রি করেছেন? উত্তর না হলে ওই ধান বিক্রির টাকা আটকে দেওয়া হবে। অন্যের মোবাইল নম্বর দিয়ে ভুয়ো নামে সরকারের কাছে ধান বিক্রির চক্র আটকাতে এবার এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#State Government, #paddy

আরো দেখুন