প্রথম দিনেই গৌড়বঙ্গে ‘দুয়ারে সরকার’ অভিযানে মিলল বিপুল সাড়া
মঙ্গলবার ইংলিশবাজার পুরসভার ভবন থেকে একপ্রস্থ কাজ সেরেছেন পুরকর্তারা। আজ, বুধবার থেকে ইংলিশবাজার শহরের ওয়ার্ডগুলিতে শিবির করে চলবে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির কাজ। প্রতি তিনটি ওয়ার্ড পিছু খোলা হবে একটি করে শিবির। প্রতিদিন অন্তত চারটি করে শিবির করার উদ্যোগ নিয়েছে ইংলিশবাজার পুরসভা (English Municipality)। এদিকে, দুয়ারে সরকার কর্মসূচির প্রথমদিনে ব্যাপক সাড়া পড়েছে মালদহ ও দুই দিনাজপুরে।
ইংলিশবাজার পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য তথা প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার (বাবলা) বলেন, দুয়ারে সরকার কর্মসূচির প্রথম দিনেই আমরা শহরবাসীর কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি। এদিন প্রায় ২৫০ জন বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছেন। বুধবার থেকে আমরা শহরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে শিবির করব। মোটামুটি তিনটি করে ওয়ার্ড নিয়ে মাঝামাঝি কোনও জায়গায় ওই শিবির করা হবে। সেখান থেকে ১০টি প্রকল্পের জন্য উপভোক্তাদের কাছ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করা হবে। কোন ওয়ার্ডের জন্য কবে শিবির করা হবে তা মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিবিরে খাদ্যসাথী প্রকল্পে পাওয়া রেশন কার্ডের তথ্য সংশোধন এবং কার্ড স্থানান্তরের আবেদনও করা যাবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ভাতার জন্যও ফর্ম পূরণ করা যাবে।
অন্যদিকে, জেলাজুড়ে ওই কর্মসূচি উপলক্ষে শিবির করতে ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ অবধি সময় লেগে যাবে বলে আগেই প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল। বর্তমানে প্রশাসনের কর্তারা এব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে।
শহরের পাশাপাশি এদিন পুরাতন মালদহ ব্লকের ভাবুক এবং যাত্রাডাঙা গ্রামপঞ্চায়েতে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ব্লক প্রশাসনের কর্তারা বিভিন্ন প্রকল্প ধরে ধরে পরিষেবা সংক্রান্ত খোঁজখবর নেন। পুরাতন মালদহের যুগ্ম বিডিও রাণাদিত্য বিশ্বাস বলেন, দুটি এলাকাতেই শিবিরে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি।
এদিন এই কর্মসূচির ফলে দীর্ঘদিনের সমস্যা মিটেছে বালুরঘাটের (Balurghat) অসিত সরকার ও বাপি দাস পালের মতো অনেকের। বছর খানেক ধরে ঘুরেও এতদিন স্বাস্থ্যসাথীর জন্য আবেদন করতে পারেননি তাঁরা। এদিন অবশেষে আবেদন করতে পেরেছেন। দিন সাতেকের মধ্যেই কার্ড হাতে পাওয়ার আশ্বাসও জুটেছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার আটটি ব্লক ও তিনটি পুরসভা মিলিয়ে মোট ১১ জায়গায় এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। মনিটরিংয়ের জন্য ১১ জন সরকারি আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে একই ছাদের তলায় কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী সহ মোট ১১টি প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয়।
বালুরঘাটের মহকুমা শাসক বিশ্বরঞ্জন মুখ্যোপাধ্যায় (Bikash Ranjan Mukherjee) বলেন, প্রথম দিনেই অনেক মানুষের সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। এই কর্মসূচি নানা জায়গায় বিভিন্ন ধাপে চলবে। উত্তর দিনাজপুর জেলার ৯৮টি গ্রামপঞ্চায়েত এবং চারটি পুর এলাকায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এদিন রায়গঞ্জে ১০টি ক্যাম্পের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আবেদন পত্র গ্রহন করা হয়। ১ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলায় মোট ৭০০টি এধরনের শিবির আয়োজিত হবে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা। এদিন রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া হাইস্কুলে জেলাশাসক ক্যাম্পের সূচনা করেন। এদিকে, ইসলামপুর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আশ্রমপাড়ায় এদিন শিবির খোলা হয়। পুরসভার প্রশাসক কানাইয়ালাল আগরওয়াল সেখানে উপস্থিত ছিলেন।