‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় ব্যাপক সাড়া
‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) কর্মসূচির প্রথম দিনেই ব্যাপক সাড়া পড়ল বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায়। এদিন সকাল থেকেই দুই জেলার বিভিন্ন ব্লক ও পুরসভা এলাকার ক্যাম্পগুলিতে লম্বা লাইন পড়ে। ক্যাম্পগুলিতে মূলত স্বাস্থ্যসাথী, তফসিলি জাতি ও উপজাতির শংসাপত্র, খাদ্যসাথী প্রকল্পের রেশন কার্ড, বার্ধক্য ভাতা ও বিধবা ভাতার জন্য আবেদনকারীদের সংখ্যাই ছিল বেশি। প্রকল্প সংক্রান্ত ফর্ম পূরণ করতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়ে প্রশাসনের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের। বেশ কয়েকটি ক্যাম্পে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষকে পরিষেবা দেন সরকারি আধিকারিকরা।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এদিন সকাল ১০টা থেকেই বাঁকুড়া জেলার তিনটি পুরসভা ও ২২ টি ব্লকে ২৮টি ক্যাম্প করে প্রশাসন। ব্লক স্তরের ক্যাম্পগুলিতে বিডিওরা উপস্থিত ছিলেন। জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ পাত্রসায়র ব্লকের ক্যাম্পে গিয়ে মানুষের সুবিধা অসুবিধার কথা শোনেন। এদিন বাঁকুড়া শহরের ২০ নম্বর ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে দুটি ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ময়রাবাঁধের ক্যাম্পে বাঁকুড়া সদর মহকুমা শাসক সুশান্ত কুমার ভক্ত, পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অলকা সেনমজুমদার উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনিক আধিকারিকরা ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার আগেই লাইন পড়ে যায়। জয়দেব বাউরি, সুশান্ত বাউরি, জোৎস্না লোহার সহ লাইনে দাঁড়ানো অনেকেই স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। শহরে আবেদনের ভিড় দেখা যায় খাদ্যসাথীর কার্ডের সংশোধন ও নতুন আবেদনের। জেলার জঙ্গলমহলের ব্লকগুলিতে স্বাস্থ্যসাথী ও খাদ্যসাথীর পাশাপাশি তফসিলি জাতি ও উপজাতি শংসাপত্র এবং পেনশনের জন্য আবেদনের ভিড় দেখা যায়। বাঁকুড়ার জেলাশাসক বলেন, প্রথম দিনে জেলায় ব্লক ও পুরসভা এলাকা মিলিয়ে মোট ২৮ টি ক্যাম্প থেকে সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রতিটি ক্যাম্পেই প্রচুর ভিড় ছিল। প্রথম দিনে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের জন্যই সব থেকে বেশি মানুষ আবেদন করেছেন। পুরুলিয়া জেলাতেও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার জন্য মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে। কেউ দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন জানান, কেউ আবার জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে বাড়ি ফেরেন। এদিন ক্যাম্পগুলিতে বাসিন্দাদের লাইন থাকায় কয়েক জায়গায় সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ চলে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় (Abhijit Mukherjee) বলেন , জেলাতে মোট ২৫টি ক্যাম্প করা হয়েছিল। ২০টি ব্লক এলাকায় ও ৫টি শহরাঞ্চলের বিভিন্ন ওয়ার্ডে। আমি নিজে রঘুনাথপুর এলাকার সব ক্যাম্পে গিয়েছিলাম। রঘুনাথপুরে একাধিক ক্যাম্প থেকে অনেকেই জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে সরকারি কর্মী ও আধিকারিকরা বাসিন্দাদের আবেদন করতে সাহায্য করেছেন।
পুরুলিয়া ২ ব্লকের চরগালি জুনিয়র হাইস্কুলের ক্যাম্পে আসেন গৃহবধূ বন্দনা মাহাত। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তো আমাদের আগে হতো না। তবে গ্রামের লোকের কাছে শুনলাম, ক্যাম্পে গেলেই যে কোনও সমস্যার সমাধান হবে। সেই মতো আধার কার্ড ও রেশন কার্ড নিয়ে ক্যাম্পে গিয়ে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদনের ফর্ম নিয়েছি।