অটিজম সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জেনে নিন
অটিজম এমন একটি সমস্যা, যার জন্য প্রস্তুত থাকেন না কোনো বাবা-মা। তবে সঠিক পথে এগিয়ে গেলে আপনি নিজেই আপনার আদরের সন্তানকে দিতে পারেন একটি সুন্দর জীবন। শুধু বাবা-মা নয়, একজন অটিস্টিক মানুষের প্রতি দায়িত্ব সমাজের সবার আছে। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক ধারণা।
সবাই আলাদা
প্রতিটি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ যেমন একে অপরের থেকে আলাদা, তেমনই সব অটিস্টিক ব্যক্তি এক রকম নয়। প্রত্যেকের জীবনের গল্প ভিন্ন, বেড়ে ওঠার ধরন ভিন্ন, স্বভাব-চরিত্রও ভিন্ন। সবাইকে এক কাতারে ফেলা তাই উচিৎ নয়। অন্য কারো অটিস্টিক সন্তানের সঙ্গে আপনার সন্তানের স্বভাব মিলবে এমন কোনো কথা নেই, তেমনই তাদের জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো যে একরকম হবে তাও নয়। নিজের সন্তানকে আপনি নিজেই সবচেয়ে ভাল বুঝবেন, হোক সে অটিস্টিক কিংবা সাধারণ।
নিয়ন্ত্রণ থাকুক তার হাতেই
একজন অটিস্টিক মানুষের জন্য তার পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলা খুবই কঠিন হতে পারে। তাই কিছু কিছু ব্যাপারে তাদের অতিরিক্ত খুঁতখুঁতে হতে দেখা যায়, এভাবে তারা পরিস্থিতির উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে।
আপনার সন্তান যদি কোনো নির্দিষ্ট ব্যাপারে খুঁতখুঁতে হয়, সেই কাজটি তার হিসেবে না হলে খুব রেগে যায়, তাহলে তার ইচ্ছা অনুযায়ীই কাজটি করুন। তার এই ইচ্ছার মূল্য দিন। মাঝে মাঝে বাবা-মা হিসেবে বিরক্তি আসবেই, তবে এখানে সন্তানের ইচ্ছাটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
অনুমান করে নেবেন না
অটিস্টিক বাচ্চারা জনসম্মুখে অনেক সময়ই ভিন্ন আচরণ করতে পারে, যা হয়তো তার বয়সের সঙ্গে যায় না। যেমন, ১২ বছরের কোনো শিশু হঠাৎ ৩-৪ বছরের বাচ্চার মতো আচরণ করতে পারে। এক্ষেত্রে অপরিচিত লোকজন তাকে দেখে অতিরিক্ত দুষ্টু ভেবে বসতে পারে, অন্যভাবে দেখতে পারে। সামাজিক অসচেতনতা থেকেই হয় এমন।
এক্ষেত্রে আপনি যা করতে পারেন তা হল, পরিস্থিতি বুঝে কাউকে জানাতে পারেন আপনার সন্তান অটিস্টিক। মনে রাখবেন, মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি একদিনে পাল্টানো সম্ভব নয়। তবে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে আপনাকেই।
ছোটখাটো সাহায্য
অটিজম কোন ক্ষণস্থায়ী অসুখ নয় যে একদিন ভাল হয়ে যাবে, তাই অটিস্টিক ব্যক্তির প্রতি আপনার ব্যবহারও হতে হবে খানিকটা ভিন্ন। পথ চলতে অটিস্টিক কারো দেখা পেলে কিংবা পরিবারের কোনো ব্যক্তি অটিস্টিক হলে আপনি তাকে ছোট ছোট সাহায্য করতে পারেন। যেমন তার বাবা-মায়ের কাজে সাহায্য করা, কিংবা ব্যাগটা হাতে নিয়ে একটু এগিয়ে দেয়া।
অটিজম নিয়ে ভুল ধারণা
অনেকেই মনে করেন, অটিস্টিক ব্যক্তিদের মধ্যে মানবিক অনুভূতি-সহানুভূতি নেই। এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। আমাদের মতোই তারা সাধারণ মানুষ, তাদেরও নিজস্ব ইচ্ছা-অনিচ্ছা, পছন্দ-অপছন্দ রয়েছে। যার মূল্য দেওয়া বাবা-মায়ের একান্ত কর্তব্য। স্বাভাবিক মানুষের মতো করে না পারলেও নিজস্ব ঢঙে ঠিকই নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেন তারা।