‘রাম কে নাম’ – এক প্রাসঙ্গিক তথ্যচিত্র
৬ই ডিসেম্বর, ১৯৯২। ভারতের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় দিন। এই দিনই অযোধ্যায় শতাব্দী প্রাচীন বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে দেয় হিন্দু কর সেবকরা। সেদিনকার ঘটনাক্রম আমরা প্রায় কেউই সঠিক জানিনা। পুরোটাই বড়োদের কাছ থেকে শোনা। তারা নিজেরাও এই বিতর্কিত বিষয় সম্পর্কে পুরোটা জানেন না। সংবাদমাধ্যমগুলিও সেই সময় রাজনৈতিক নেতাদের তাঁবেদারিতে ব্যস্ত ছিল। তাই বাবরি মসজিদ সম্পর্কে সঠিক তথ্য আজও অধরা।
এই প্রেক্ষাপটে অনন্ত পট্টবর্ধনের ‘রাম কে নাম’ তথ্যচিত্রটির গুরুত্ব অপরিসীম। বাবরি মসজিদ কান্ড নিয়ে এক অসাধারণ তথ্যচিত্র এটি। এই তথ্যচিত্রে মূলত দেখানো হয় রাজনৈতিক নেতারা কিভাবে নিজেদের লাভের জন্যে ধর্ম এবং বর্ণবাদকে ব্যবহার করে। এই তথ্যচিত্রে বিজেপি নেতারা এই ইস্যুকে দলের শক্তি বাড়াতে কাজে লাগায়।
১৯৪৯ সালে বাবরি ষড়যন্ত্রের সোপান। এক পুজারি স্বপ্নাদেশ পান রামের মূর্তিকে বাবরি মসজিদে প্রতিষ্ঠা করার। তারপরেই জেলা শাসক কে কে নাইয়ারের মদদে সেই মসজিদে রামের মূর্তির আবির্ভাব।
আর এরপরই সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার সূত্রপাত হয়। আর দলের শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই অস্থিরতাকেই ব্যবহার করতে শুরু করে বিজেপি। এল কে আডবানি যে রথযাত্রা শুরু করেন, তা আরও ইন্ধন যোগায় এই অস্থিরতাকে।
বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং তার পরের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় মূলত সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদেরই প্রাণ যায়। রাজনীতির আঙিনায় উলুখাগড়াদেরই বারবার প্রাণ যায়। যে কুনাট্য ৬ই ডিসেম্বর রচিত হয়েছিল ১৯৯২ সালে, তার প্রভাব আজও বয়ে চলেছে ভারতবর্ষ।
তাই, অনন্ত পট্টবর্ধনের এই তথ্যচিত্রটি সকলের দেখা উচিত। কারণ, ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির কুপ্রভাব আজও সমান প্রাসঙ্গিক আমাদের দেশে।